সামিম আহমেদ, কলকাতা: কোভিড যেভাবে রে রে করে তেড়ে আসছে তাতে সাধারণ মানুষ থেকে সেলিব্রেটিদেরও নাভিশ্বাস উড়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কোথাও অক্সিজেনের হাহাকার, কোথাও আই.সি.ইউ বেডের হাহাকার, কোথাও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর অভাব, এরই মধ্যে দিগ্বিদিক শূন্য মানুষের পাশে দাড়িয়ে সাহায্যের হাত ছানি দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন কলেজ পড়ুয়া কারিমা আখতারা, ওয়াসিম আহমেদ ,মৌমিতা ইয়াসমীন, জুন্নুন মিস্ত্রী, ওয়াহিদুর রহমান, আরিজা তাবাসসুম, সাফিয়া সুলতানারা যাদেরকে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছে ফেসবুক পেজ ‘বাপ কে বলো’। কখনো রাত দেড়টা, কখনোবা ভরা দুপুর নিরন্তর পরিষেবা দিয়ে চলেছেন সদ্য কলেজে ভর্তি হওয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। প্রত্যেকের বাড়ি বিভিন্ন বিভিন্ন জেলাতে। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রত্যেকের পরিচয় সঙ্গে অটুট অঙ্গীকার মানুষ যেন ছোট্ট ভুলের কারণে প্রাণ হারিয়ে না ফেলে।
‘বাপ কে বলো’ পেজের ততত্ত্ববধানে গবেষক সাগির হুসেন। তিনি ফোনে জানিয়েছেন, ‘মানব সেবাই পরম সেবা’। তাই ছোট ছোট কলেজ পড়ুয়া দের নিয়ে জাপানে বসে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবার সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। রমযান মাসে সম্পূর্ণ রোযা রেখে কোনো রোগীকে কলকাতাতে বেড পাইয়ে দেওয়া, কোনও রোগীর ঔষধ, অক্সিজেন, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা করে দেওয়া যেনো তেনো প্রকারে রোগী কিংবা তার পরিবারের লোক অসুবিধাতে না পড়ে এটাই ‘বাপ কে বলো’ টীম এর মূল মন্ত্র। ‘বাপ কে বলো’ পেজে নিত্য দিনের ন্যায় সেদিনও খবর এসেছিল ভাঙড়ের এক ডেলিভারি বয়ের মা কোভিড আক্রান্ত হয়ে আর জি কর হসপিটালে ভর্তি থাকা অবস্থাতে মারা যান। ছেলে মায়ের বডি পাওয়ার জন্য দিগ্বিদিক শূন্য হয় ঘুরতে থাকে।
কোনো সুরাহা হয় না শেষমেষ পেজে জানালে , পেশায় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ওয়াহিদুর রহমান ও ডেন্টাল পাঠরত মৌমিতা ইয়াসমিন জেলা স্তরীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সঙ্গে কথা বলে সেই ডেড বডি রিলিজ করে সমাধিস্থ করেন। এছাড়াও এই পেজের সদস্যরা আরো অনেক রোগীর পরিবারের সামনে দেবদূতের মতন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct