আপনজন ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কাফিল খান যিনি চার বছর আগে গোরক্ষপুরে শিশুদের হাসপাতালে শিশুদের বাঁচিয়ে শিরোনামে এসেছিলেন, তিনি বৃহস্পতিবার বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে সরকার তাকে বরখাস্ত করেছে, যদিও তার হাতে এখনও আদেশ এসে পৌঁছয়নি। তিনি জানান, এই আদেশ হাতে পেলে তার বিরুদ্ধে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবেন। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা ট্যুইট করে উত্তরপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হন।
গোরক্ষপুরে মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেনশনে থাকা ডা. কাফিল খান বলেছেন, আদালত থেকে তিনি ক্লিনচিট পেয়েছেন এবং নয়টি তদন্ত হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি ট্যুইটারে বলেন, সরকার অক্সিজেন সরবরাহকারীদের বকেয়া না দেওয়ায় মৃত্যু হয় ৬৩ শিশুর। আটজন ডাক্তার ও কর্মীকে সাসপেন্ড করা হলেও তাদের মধ্যে সাতজনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট দুর্নীতি নিয়ে ক্লিনচিট পেলেও তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিভাবকরা এখনও ন্যায়বিচারের অপেক্ষায়। ন্যায়বিচার না অবিচার তা মানুষের উপরই ছেড়ে দেন।
ডা. কাফিল খান আরও বলেন, আমি জানতাম যে আমি কোন ভুল করিনি এবং আমাদের বিচার বিভাগের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রেখেছি। তাই আমি কখনই এই সরকারের কাছ থেকে ন্যায়বিচার আশা করিনি।
তার এই বরখাস্ত প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি। তিনি হিন্দিতে ট্যুইটে লেখেন, “ইউপি সরকার ডা. কাফিল খানকে বরখাস্ত করেছে, যা খাারপ মনোবৃত্তি দ্বারা অনুপ্রাণিত। ঘৃণা দ্বারা অনুপ্রাণিত সরকার তাকে হয়রানি করার জন্য এই সমস্ত করছে। তবে সরকারের মনে রাখা উচিত যে এটি সংবিধানের ঊর্ধ্বে নয়। কংগ্রেস দল ডা. কাফিলের ন্যায়বিচারের লড়াইয়ে তাঁর সাথে রয়েছে এবং সর্বদা থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বিআরডি হাসপাতালে ৬৩ টি শিশুর মৃত্যু ঘটে অক্সিজেনের অভাবে। সেসময় মৃত্যুমুখ থেকে শতাধিক শিশুকে বাঁচিয়েছিলেন কাফিল খান। নিজে অক্সিজেন জোগাড় করে ওই সব শিশুদের বাঁচানোর মিডিয়ার চোখে হিরো হয়ে উঠেছিলেন ডা. কাফিল খান। সেই হিরো হয়ে ওঠা সহ্য করতে না পেরে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার তাকে সাসপেন্ড করে। এমনকী গ্রেপ্তার করার পরে তাকে জেলবন্দি করা হয়। ডা. খান বলেন, তাকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বিষয়ে বক্তৃতার দেওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনও প্রমাণ মেলেনি। আর বিআরডি হাসপাতালেও অবহেলার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কোর্টের রায়ে মুক্তি পেলেও অবশেষে তাকে চাকরি থেকে পুরোপুরি বরখাস্ত করল যোগী আদিত্যনাথের সরকার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct