আপনজন ডেস্ক: ক্রাউন প্রিন্স মুহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে বিতর্ক চলছেই। হামেশাই তিনি সমালোচিত হয়ে আসছেন। দুর্নীতির মুক্ত করার লক্ষ্যে রাজপবিরাবের বহু সদস্যকে বন্দি করেছিলেন। তখন অভিযোগ ওঠে, চক্রান্ত করে অনেককেই নিজের রাস্তা থেকে সরাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ। ক্ষমতালোভীর তকমা জুটতে থাকে ক্রাউন প্রিন্স বিন সালমানের। তবে অকাট্ট প্রমাণের অভাবে বার বার গা বেঁচে গিয়েছে বিন সালমানের।
তাই ক্রাউন প্রিন্সের চ্যারিটি সংস্থার কার্যকলাপ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় খোদ
সৌদি সরকার। অভিযোগ, এই সংস্থার আড়ালেই না কি বিভিন্ন অপকর্ম চালান প্রিন্স।
ব্রিটেনের ফাইন্যানিশয়াল টাইমসে্ একটি তথ্য অনুয়ায়ী, বিন সালমানের এই সংস্থার নাম ‘মিস্ক’। বহু সৌদি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, যে এই সংস্থার মাধ্যমে প্রিন্স চর নিয়োগের ব্যবসা ফেঁদে রেখেছেন। একই সঙ্গে অবৈধ কাজকর্ম চালান। মার্কিন বিচার বিভাগও একই ইঙ্গিত দিয়েছে।
গত নভেম্বরে প্রিন্সের চ্যারিটি সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেন প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান সাদ আল জাবারি। প্রিন্সের রোষ থেকে পালিয়ে তিনি এখন কানাডায় আশ্রয় নিয়েছেন। বহুবার তাকে খুন করার চেষ্টা করা হলেও শেষে সবকটি ব্যর্থ হয়েছে। সম্প্রতি সৌদি প্রিন্সের পাঠানো চরেরা তাঁর একমাত্র কন্যা ও ছোট ছেলেকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
২০১৮ সালে তিনি মার্কিন গোয়েন্দাদের বিষয়টি সম্পর্কে আভাস দিয়ে ছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট টুইটারের মাধ্যমে আমেরিকায় নিজের চর ছড়িয়ে যাচ্ছেন সৌদি প্রিন্স । তাঁর চ্যারিটি সংস্থার আড়ালেই এই সমস্ত অপকর্ম করছেন তিনি। কিন্তু মার্কিন বিচার বিভাগে দায়ের করা মামলায় ‘মিস্ক’ অথবা এর প্রাক্তন সেক্রেটারি জেনারেল বদর আল-অকসার নাম উল্লেখ করা হয়নি। পরিবর্তে বলা হয়ে ছিল ‘ অর্গানাইজেশন-১’, যা সৌদি রাজপরিবার দ্বারা নির্মিত এবং ‘ ফরেন অফিসিয়াল-১’ দ্বারা পরিচালিত। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে এগুলির সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্সের যোগ থাকার মিল খুঁজে পান মার্কিন গোয়েন্দারা। পরে দুয়ে দুয়ে চার করে নেন।
মামলায় বলা হয়েছে, যে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে সৌদি আরবের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রাক্তন টুইটার কর্মীরা বিদেশি অফিসিয়াল-১ এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, উপহার, নগদ অর্থের বিনিময়ে যারা টুইটার ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে তথ্য দেন এবং তাদের ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়ে ছিল। ক্রাউন প্রিন্সের রোষে পড়া ব্যক্তি এবং সমালোচকদের তদারকি করতে এবং আল-জাবরী অনুসন্ধানের জন্য এগুলিকে ব্যবহার করা হয়ে ছিল। মিসকার কর্মীর পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ২০১৭ সালে জাবেবীর ছেলেকে তার অভিভাবক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করে ছিল। সেই সময় তাঁদের ঠিকানা ফোন নম্বর জানার চেষ্টা করে ছিল ওই ব্যক্তি। সেই সময় জাবেরীর বিষয়টি নিয়ে প্রথম সন্দেহ হয়। তিনি সেই সময় প্রিন্সের কাছ থেকে হুমকি পেয়ে সদস্য ব্রিটেন থেকে কানাডায় বসবাস শুরু করে ছিলেন। অনেকের দাবি, এই ভাবেই ফাঁদ পেতে জামাল খাশোগি পর্যন্ত পৌঁছানোর চেষ্টা করে ছিলেন প্রিন্স। কারণ, সৌদির ভাবমূর্তিকে আন্তজার্তিক স্তরে সমান রাখতে ‘মিস্ক’-এর সঙ্গে বহু চ্যারিটি সংস্থার সংযোগ ঘটে। গেট ফাইন্ডেশন, ব্লুমবার্গ, হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় ও জেনেরেল ইলেক্ট্রিক্স এর সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন হয়। খাশোগি হত্যার পর সম্পর্ক ছেদ হয় মিস্কের।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct