আপনজন ডেস্ক: আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটনে হতে চলেছে ইসরাইল-আমিরাত চুক্তি। আর এই চুক্তি নিয়েই সমালোচনায় মুখর গোটা মুসলিম বিশ্ব। যায়নবাদীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হচ্ছে এমনও কথা শুনতে হচ্ছে আমিরাতকে। কিন্তু এর পিছনেও চলছে নতুন খেলা। করোনা আবহে তেল ব্যবসায় রীতিমত প্রভাব পড়েছে। আর এই ব্যবসাকেই চাঙ্গা করতেই হয়ত বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছে আরব ও ইসরাইল। সেটি কিভাবে? চুক্তির আগে এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে পশ্চিমা দেশ থেকে প্রকাশিত একটি ম্যাগাজিন ফরেন পলিসি।
তাদের দাবি, এই চুক্তি হলে ১৯৬৮ সালে তৈরি গোপন তেল রুটটি খুলে যাবে। তাতে সুয়েজ খালকে পাশ কাটিয়ে বড় বড় অত্যাধুনিক তেলের ট্যাঙ্কার অনায়াসে যাতায়াত করতে পারবে। তাতে তেল ব্যবসা সস্তা হবে। মুনাফা পাবে উভয় আমদানী ও রফতানিকৃত দেশগুলি।
কিন্তু কারা নির্মান করে ছিল এই রুট জানেন? পত্রিকাটির দাবি, এই রুট গড়ে উঠেছিল ইরান-ইসরাইলের যৌথ উদ্যোগে। চমকে উঠেছেন? হ্যাঁ, এটা ঠিকই, যে ইরান-ইসরাইলই এই গোপন পাইপ লাইনের নির্মাতা। আসলে ইসলামিক রেভিলিউশনের আগে পর্যন্ত ইরান-ইসরাইলের সুসম্পর্ক ছিল। সেই সময় নিজেদের সুবিধার্থে এই রুট গড়ে তোলে এই দুই দেশ। এই রুটের মালিকানায় রয়েছে দ্য ইউরোপ এশিয়া পাইপলাইন কোম্পানি(ইএপিসি)। ১৫৮মাইল এই পাইপলাইনটি ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। সুয়েজ খালের রুটে ট্যাঙ্কারগুলি যাতায়াত করতে যে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা এগিয়ে চলার জন্যই রুট তৈরি করা হয়েছিল।
এই পাইলাইন নির্মান কোম্পানিটির সিইও ইজস্ক লেভি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এটি তেল ব্যবসায়ই অনেকগুলি সুযোগ খুলে দেবে। যে ট্যাঙ্কারগুলি সুয়েজের মাধ্যমে আজারবাইজান এবং কাজাকিস্তান থেকে ইসরাইলের ভূমধ্যসাগরীয় তীরে অবস্থিত আসকেলন বন্দর ঢুকতে পারে না, এই রুট খুললে সেই সমস্যা দূর হবে। সেখান থেকেই পাম্পিং-এর মাধ্যমে গালফ অঞ্চলের আকবা উপসাগর থেকে ইলাত শহরে পৌঁছাবে। পরে সেখান থেকে স্থলপথে তেল পৌঁছে যাবে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া বা এশিয়া অন্যান্য অঞ্চলে। পাশাপাশি আরব উপদ্বীপের সমস্ত অঞ্চল সুয়েজ খালকে বাইপাস করতে পারবে।
১৯৫৬ তে সুয়েজ খালের রুটে বারবার সংকট চলার জন্য সমস্যা এড়াতেই গোপনে ইরান-ইসরাইল উভয় ৫০-৫০ পার্টনারশিপে পাইপলাইনটি তৈরির উদ্যোগ নেয়। ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত এবিষয়ে ওই দুই দেশ ছাড়া পাইপলাইনটির বিষয় কেই জানতই না। ঘটনা তখন সামনে আসে যখন ২০১৪ সালে ওই পাইপলাইনে ফুটো হয়ে যাওয়ায় ইসরাইলের তীরবর্তী অঞ্চলে সমুদ্র দূষণ শুরু হয়। ততদিন পর্যন্ত উভয়দেশই ওই পাইপলাইন ব্যবহার করে গিয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct