লোকাল ট্রেনের চাকা বন্ধ পাঁচ মাস। জীবিকায় কোপ আমিরুল, আসগারদের। লোকাল ট্রেনে হকারি করে সংসার চলত ওদের। হকারি জীবিকা ছেড়ে অন্য পেশায় যাবেন তারও উপায় নেই। হকারি ছাড়া আর তো কোনও কাজ জানা নেই। সমস্যায় পড়েছেন অামিরুলদের মত কয়েক হাজার লোকাল ট্রেনের হকার।
আমিরুল বলছিলেন, চল্লিশ বছর হকারি করছি। এই জীবিকাতেই সংসার চালানো, ছেলেমেয়ের পড়াশোনা করিয়েছি। চার দশকের দীর্ঘ সময়ে কোনওদিন এমনভাবে জীবিকা সমস্যায় পড়িনি। লকডাউন এসে তা দেখতে হল। আমিরুল জানাল, বয়স বেড়েছে। দৈহিক শ্রমের কাজ আর পারব না। তেমন অভ্যাসও নেই। ছেলের সংসারে আছি। খারাপ লাগছে। বেকার তো ছিলাম না। এখন রোজগার নেই। উপায়ও নেই। কি করি।
একই অবস্থা আসগার ও রমজান আলির। ওদের সহনাগরিক হকার সঞ্জয় মণ্ডল, অসীম দাস একই ভাবে বেকার হয়েছে। অসীম সম্প্রতি সব্জি ব্যবসা শুরু করেছে। রমজান গেছুড়ে জোগাড় করে শুরু করেছে ডাবের ব্যবসা। কিন্তু অামিরুল কি করবে? দক্ষিণপূর্ব রেলে হকারি করে ষাট পার করে হঠাৎ আমিরুল চাইছে না সরকারের ঋণ, চাইছে সরকারি অনুদান।
দক্ষিণপূর্ব রেলে খড়্গপুর থেকে সাঁতরাগাছি পর্যন্ত রয়েছে সাড়ে চার হাজার হকার। শুকনো খাবার থেকে শুরু করে, ফল, স্টেশনারী ও পানীয় জলের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বিকিকিনি চলত আপ-ডাউনের চলন্ত লোকাল ট্রেনের কামরায়। লকডাউনে হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া মানুষের একটা অংশ হকার। আনলক শুরু হলেও রেল আনলকের খবর নেই। দুশ্চিন্তা বাড়ছে আমিরুলদের। এ ব্যাপারে দক্ষিণ পূর্ব রেলের হকার ইউনিয়নের সম্পাদক জুলফিকার সেখ জানাচ্ছেন, হকাররা এখন বেকার। ওদের পরিযায়ী শ্রমিকদের মত একশদিনের কাজ দেওয়া হোক।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct