আপনজন ডেস্ক: গুজরাতে ভয়াবহ দাঙ্গার ক্ষত এখনও শুকোয়নি। ২০০২ সালে ভয়াবহ গুজরাত দাঙ্গায় বহু মুসলিমের প্রাণ গিয়েছিল বিজেপি শাসনেই। সেই বিজেপি শাসন এখনও অব্যাহত। তবে ক্ষমতার তখতে বসার ব্যক্তি পারটেছে। তঃকালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত। আর তৎকালীন গুজরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ আজ দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এই রাজনেতিক ব্যকিত্বের পদ পালটালেও দাঙ্গাপীড়িত গুজরাতের মুসলিমদের কিন্তু হাল ফেরেনি ১৮ বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর। গুজরাত দাঙ্গার শিকার প্রায় ১৭ হাজার মুসলিম এখনও অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তাদের না মিলছে চাকরি, না মিলছে কাজ, না মিলছে ঋণ, না মিলছে বাড়ি।
এরকম অসহায় পরিবারের সংখ্যা বহু। এইসব পরিবারকে দেখা যাবে উত্তর মেহসিনা জেলার নন্দসান গ্রামে। প্রায় ৩৫০০টি পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে সেখানে। গুজরাত দাঙ্গায় সব হারিয়ে সেখানেই এখন ঠাঁই তাদের। এই সব পরিবারগুলি খুবই অস্বাস্থ্যকর অবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। যে পুনর্বাসন কলোনি গড়া হয়েছে মুসলিমদের জন্য তার মধ্যে ৮৩টি খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে। নিরুপায় হয়ে তাদেরকে থাকতে হচ্ছে। কারণ, কোনও ধরনের সরকারি সহায়তা মিলছে না।
রাষ্ট্রসংঘের সহায়তা নিয়ে এই সব ভুক্তভোগীদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে মুসলিম কোঅর্ডিনেশন কমিটি। এই সংগঠনের আহ্বায়ক মুজাহিদ নাফিস বলেন, গুজরাতের আটটি জেলায় গুজরাত দাঙ্গার শিকার মুসলিম পরিবরাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছ্ কিন্তু তারা দিনযাপন করছেন খুবই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যে।
তবে, দাঙ্গাপীড়িতদের জন্য কলোনি গড়ে তুলেছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জামায়াতে ইসলামি হিন্দ, ইসলামিক রিলিফ কমিটি, আহমেদাবাদ সারবজনিক ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট প্রভৃতি। নাফিস জানান, গুজরাত দাঙ্গায় প্রায় ২০০০ মুসলিমের প্রাণ গিয়েছে। ৩০২টি দরগা, ২০৯টি মসজিদ, ১৩টি মাদ্রাসা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যদিও এই দাঙ্গায় পৃথিবী জুড়ে ভারতের সম্মান ডুবেছে। ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এই দাঙ্গার দায় একনও প্রদানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। সেটাই সবচেয়ে বড় অস্বস্তিকর।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct