আপনজন ডেস্ক: হাঁপানি রোগের সাথে শরীরের আভ্যন্তরীণ ঘড়ির যে একটা সম্পর্ক আছে তা আগেই জানা গেছিল। কিন্তু তরুণ-তরুণীদের উপর ঘুমের সম্পর্কর সাথে হাঁপানি ও অ্যালার্জি রোগের প্রভাব নিয়ে গবেষণা এই প্রথম করা হল।
গবেষকরা বলছেন, বর্তমান প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের ঘুমের সময়ের সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাসের স্বাস্থ্যকে যে কিভাবে প্রভাবিত করে তা এই গবেষণা এক নতুন পথের দিশারী হতে চলেছে।
কানাডার আলবার্টা ইউনিভার্সিটিতে পালমনারি মেডিসিন বিভাগ এর ড: সুব্রত মৈত্রের নেতৃত্বে হয়, তিনি স্পেনের বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ-এ ছিলেন, যখন তিনি গবেষণাটি চালিয়েছিলেন। তিনি বলেন: "হাঁপানি এবং অ্যালার্জিজনিত রোগ সারা বিশ্বে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে এবং এর প্রকোপ বাড়ছে, আমরা এই বৃদ্ধির কারণগুলি আমরা জানি, যেমন দূষণ এবং তামাক জাতীয় ধূমপানের কারণে, তবে আমাদের এখনও আরও খুঁজে বের করতে হবে ।
"ঘুম এবং 'ঘুমের হরমোন' মেলাটোনিন হাঁপানিকে প্রভাবিত করে, তাই আমরা দেখতে চেয়েছিলাম যে দেরিতে ঘুমানো বা তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যাওয়া কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে, তাদের হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ায় কিনা সেটা দেখা।"
এই গবেষণায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গে, ১৩ বা ১৪ বছর বয়সী ১৬৮৮ জন কিশোর-কিশোরী জড়িত ছিলেন এই সমীক্ষায়।
প্রতিটি অংশগ্রহীতার যাদের হাঁচি, হাঁপানি বা অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ, যেমন সর্দি, নাক এবং হাঁচি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। 'সন্ধ্যার অনুভূতি', 'সকালের অনুভূতি' এই ধরণের একাধিক প্রশ্ন তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, যেমন সন্ধ্যা বা রাতের কোন সময় তারা ক্লান্ত বোধ করে, কখন তারা ঘুম থেকে ওঠার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কীভাবে ক্লান্ত হয়, তারা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম কেমন অনুভব করেন ইত্যাদি।
গবেষকরা কিশোর-কিশোরীদের লক্ষণগুলিকে তাদের ঘুমের পছন্দগুলির সাথে তুলনা করে, হাঁপানি এবং অ্যালার্জিকে প্রভাবিত করে এমন অন্যান্য কারণগুলিকে বিবেচনা করে যেমন অংশগ্রহণকারীরা কোথায় থাকেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ধূমপান করেন কিনা ইত্যাদি।
তারা দেখতে পান যে হাঁপানি হওয়ার সম্ভাবনা কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় তিন গুণ বেশি ছিল যারা আগে ঘুমোতে পছন্দ করেন, তাদের তুলনায় পরে যারা ঘুমোতে পছন্দ করেন তাদের। তারা আরও জানতে পেরেছিল যে আগে ঘুমাতে যাওয়ার তুলনায় অ্যালার্জিজনিত রাইনাইটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দেরি করে ঘুমাতে যাওয়াদের দ্বিগুণ বেশি ছিল।
ডাঃ মৈত্র আরও বলেছেন: "আমাদের ফলাফলগুলি বোঝায় যে পছন্দের ঘুমের সময় এবং অ্যাজমা এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অ্যালার্জির মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে।“
“আমরা এটাও জানি যে বর্তমান প্রজন্মের অতিরিক্ত মোবাইল, ট্যাবলেট-এর প্রতি আসক্তি দেরি করে ঘুমাতে যাওয়ার কারনগুলির মধ্যে অন্যতম”
এই গবেষণার দ্বিতীয় ধাপ ২০২৮-২০২৯ সাল নাগাদ করা হবে। একই মানুষের উপর। জীবনযাত্রায় তাদের এই পরিবর্তন কতটা প্রভাবিত করে তা খুঁজে বের করার জন্য।
অধ্যাপক থিয়েরি ট্রোস্টার্স ইউরোপীয় রেসপিরেটরি কাউন্সিল-এর সভাপতি বলেন “আমদের আরো গবেষণা চালাতে হবে এটা জানার জন্য যে কিভাবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হাঁপানি ও এলার্জি বাড়ছে”।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct