আপনজন ডেস্ক: মুসলিমদের পবিত্র ব্যক্তিত্ব পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদ সা.-এর নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে গত ১১ আগস্ট বেঙ্গালুরু শহরে ব্যাপক অশান্তি হয়। বিক্ষুব্ধ মুসলিমরা চড়াও হয় এক কংগ্রেস বিধায়কের বাড়িতে। অভিযোগ ছিল, বেঙ্গালুরুর ডিজে হাল্লি এলাকায় কংগ্রেস বিধায়ক অখন্ড শ্রীনিবাস মূর্তির ভাই হযরত মুহাম্মদ সা. সম্বন্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য পোস্ট করেছিলেন। তার জেরে বিক্ষুব্ধ মুসলিমদের একাংশ চড়াও হয় বিধায়কের বাড়িতে। এমনকি তার বাড়ি ভাঙচুর করে। পুলিশের গাড়ি সহ সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে বলে অভিযোগ। পরে বিধায়কের অভিযুক্ত ভাই অবশ্য বলেন, তার মোবাইল ব্যবহার করে কেউ এ কাজ করেছিল, তিনি করেননি। যদিও বিক্ষোভ থামাতে পুলিশের গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। বেশ কিছু মানুষ আহত হয়। এই ঘটনায় কর্নাটকের বিজেপি শাসিত সরকার জানায়, তার উত্তরপ্রদেশের কায়দায় ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে।
এই হাঙ্গামার পর কর্ণাটকের বিজেপি সরকার ও বিজেপির পক্ষ থেকে আঙুল তোলা হয় কেরল ভিত্তিক মুসলিম সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই) ও তাদের রাজনৈতিক সংগঠন এসডিপিআই-এর উপর। বিজেপি দাবি তোলে এই দুটি সংগঠনকে কর্ণাটকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু করে দেয় কর্ণাটক সরকার।
কিন্তু এখনই কর্ণাটক সরকার পপুলার ফ্রণ্ট বা এসডিপিআইকে নিষিদ্ধ করার কথা ভাবছে না। যে ব্যাপারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কর্ণাটকের আইনমন্ত্রী জেসি মাধুস্বামী বলেছেন, আমাদের এখন বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন আছে। কোনো স্থির সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। কারণ, পুলিশ বা সরকারের অন্যান্য দফতর থেকে কোনো রিপোর্ট আসেনি পিএফআই ও এসডিপিআই সম্পর্কে। তাই আলোচনার বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে।
সাংবাদিকরা যখন মন্ত্রীকে জিগেস করেন, এসডিপিআই ও পপুলার ফ্রন্টকে সরকার নিষিদ্ধ করছে কিনা। সেই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সরকারের উপর চাপ আছে এই দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার জন্য। কিন্তু রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী নিষিদ্ধের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে হবে কেন্দ্রের সঙ্গে।
মাধুস্বামী বলেন, পুলিশ ও অন্যান্য দফতরের কাছ থেকে রিপোর্ট পেলেই তবেই নিষিদ্ধ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজন হলে আইন সংশোধন করতেও দ্বিধা করা হবে না।
তবে কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বাসবরাজ বম্মাই বলেছেন, হাঙ্গামায় যা ক্ষতি হয়েছে তা আক্রমণকারীদের থেকে আদায় করা হবে।
যদিও বেঙ্গালুরুর ঘটনার পর খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এর পিছনে এসডিপিআই ও পিএফআইয়ের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। এরপর কর্ণাটক পুলিশ ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তাদের সদস্য মুজাম্মিল পাশাকে গ্রেফতার করে। তবে, এসডিপিআইয়ের কর্নাটক প্রেসিডেন্ট ইলিয়াস মুহাম্মাদ তুম্মবে এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেছেন, তাদের কেউ বেঙ্গালুরুর ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct