আপনজন ডেস্ক: লকডাউনের মধ্যে আর এক বিপদ। বিষাক্ত জল পান করে অসুস্থ হয়ে পড়লেন তিনজন। লকডাউনের মধ্যে পানীয় জলে বিষ-এর আতঙ্কে সরকারি সাবমার্শাল থেকে জল খাওয়া বন্ধ করে দিল খোদ গ্রামবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোল্লাবাড়ি গ্রামে। এলাকাবাসীদের কাছ থেকে জানা যায়, মোল্লাবাড়ি গ্রামে প্রায় ৭০০ পরিবারের বসবাস। এই সমস্ত পরিবারকে ওই গ্রামে থাকা একটি মাত্র সরকারি সাব মার্শাল পাম্প এর পানীয় জলের উপর ভরসা করে থাকতে হয়।শুক্রবার সকাল বেলা কয়েক জন গ্রামবাসী সাব মার্শাল পাম্প থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করতে গেলে ওই জল থেকে তারা কিছু গন্ধ পান। তাদের সন্দেহ হয় ওই জলের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে এলাকার তিন জন গ্রামবাসী ওই জল খাওয়ার পরই তারা অসুস্থ বোধ করেন। তারপর থেকেই মোল্লাবাড়ি গ্রামজুড়ে পানীয় জলের বিষ রয়েছে এই আতঙ্ক ছড়ায়। সাবমার্শাল থেকে পানীয় জল সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়।খবর দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনকে।এলাকায় পৌঁছান পঞ্চায়েত প্রতিনিধিরা।তারা গ্রামবাসীকে আশ্বস্ত করেন। বন্ধ করা হয় ওই পানীয় জলের উৎসটিকে।এদিকে গ্রামের পানীয় জলের একমাত্র উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন ওই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। তারা নিরুপায় হয়ে এলাকার পুকুর ও নলকূপ থেকে জল সংগ্রহ করতে শুরু করেন। তাদের বক্তব্য,একমাত্র সাবমার্শাল যা থেকে তারা পানীয় জল সংগ্রহ করতেন তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন পার্শ্ববর্তী পুকুরগুলো থেকেই তাদের খাবার জল সংগ্রহ করতে হবে। অবিলম্বে এই সমস্যা যাতে মেটানো হয় তারও দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা শেখ জয়নাল জানান,সকাল বেলাতে এই সাবমার্শাল পাম্প এ এমনিতে অনেক গ্রামবাসী আসে। যথারীতি তারা আজ সকালেও এসেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তারা লক্ষ্য করেন জল থেকে গন্ধ বেরোচ্ছে। তখনই তাদের মনে হয় এই জলে হয় তো বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। তাই তখন থেকেই এইখান থেকে জল সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়। এখন উপায় না থাকায় আমাদেরকে পুকুর থেকে জল নিতে হচ্ছে।আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আক্তারী বিবি জানান এখান থেকে জল নিয়ে আমাদের পারিবারিক কাজকর্ম সম্পূর্ণ হয়। এই জল খেয়ে আমাদের মত অনেক পরিবার এখানে বেঁচে আছে।হঠাৎ করে এই সমস্যা দেখা দেওয়ায় জল নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে আমরা পুকুরের জল খাচ্ছি পুকুরের জল দিয়ে রান্নাবান্না করছি। আমরা চাই অবিলম্বে প্রশাসন সমস্যা সমাধান করুন।স্থানীয় বাসিন্দা অঞ্জারুল হক জানান সকাল বেলা এই সাবমার্শাল পাম্প থেকে একটি চায়ের দোকানে জল খেয়ে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তারা সুস্থ হয়। তারপর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এলাকাবাসী জল নেওয়া বন্ধ করেছে।আমরা স্থানীয়ভাবে পঞ্চায়েতে এ ব্যাপারে জানিয়েছি।রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শাম্মী আক্তার জানান,আমরা ঘটনাটা খতিয়ে দেখছি। পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সমস্ত বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। স্থানীয় মানুষদের জলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করছি। এ ব্যাপারে ব্লকেও আমরা জানাব।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct