আপনজন ডেস্ক: বয়স যখন মাত্র ১৫ বছর তখন থেকেই জাতীয় পতাকা তৈরি করে আসছেন দিল্লির সদর বাজারের বাসিন্দা আবদুল গফফার। এখন তার বয়স ৬৫ বছর। সারা বছর ধরে জাতীয় পতাকা তৈরি করে এলেও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রায় বিনামূল্যে বিক্রি করে থাকেন জাতীয় পতাকা। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আবদুল গফফার জানান, তার তৈরি জাতীয় পতাকা যেমন ১০ হাজার টাকায়ও বিক্রি করেন, তেমনি ৪০ থেকে ৬০ ফুট দীর্ঘ জাতীয় পতাকা বিক্রি করেন প্রায় ৬০ হাজার টাকায়। কিন্তু স্বাধীনতা দিবস এলেই সাধারণ মাপের পতাকা না লাভ না ক্ষতি নীতিতে ন্যূনতম মূল্যে বিক্রি করেন। এটা করতে গিয়ে তার স্বগোক্তি, ‘ম্যায় ইয়ে দেশকে লিয়ে করতা হুঁ’।
দিল্লির সদর বাজার এলাকায় ‘ঝান্ডেওয়ালা’ বা ‘ফ্লাগ আঙ্কল’ বলে পরিচিত গফফার জানান, বংশ পরম্পরাভাবেই তারা জাতীয় পতাকা তৈরি করে আসছেন্। তার ঠাকুরদাদা মুহাম্মদ হুসেন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য খাদি কাপড়ের জাতীয় পতাকা তৈরি সরবরাহ করতেন। সেই থেকেই জাতীয় পতাকা নির্মাণ পারিবারিক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যদিও তা নো প্রফিট নো লস চিন্তাধারার মধ্য দিয়ে। তার বাবা আবদুল রহমান এই জাতীয় পতাকা তৈরির বিষয়টি তার হাতে অর্পণ করেছিলেন্।
তবে এবার করোনা সংক্রমণের কারণে জাতীয় পতাকা বিক্রি ১০ শতাংশ কেম গেছে। গত বছর থেকেই এই মন্দার শুরু। গত বছরের তৈরি বেশ কিছু জাতীয় পতাকা পড়েছে রয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, তিনি বড় আকারের জাতীয় পতাকা যা আগের বছর বিক্রি করেছেন তা এ বছর ১০ হাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। শুধু যে বেশি দামের জাতীয় পতাকা তৈরি করেন তা নয়। ৪ থেকে ১২ টাকা দামে যেমন জাতীয় পতাকা বিক্রি করেছেন, তেমনি বহু মানুষকে বিনামূল্যে জাতীয় পতাকা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে গফাফার বলেন, জাতীয় পতাকার মধ্যে তার দেশেপ্রেম লুকিয়ে রয়েছে। তাই এভাবে অকাতরেও জাতীয় পতাকা বিলি করি ১৫ আগস্ট এলেই। তবে, তিনি আরও জানান, তার ভাইও জাতীয় পতাকা তৈরি ব্যবসায় নিয়োজিত। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও জামাই জড়িত এই ব্যবসায়। মূল কথা গোটা পরিবার জাতীয় পতাকা তৈরির মধ্যে দিয়ে দিন কাটান, সগর্বে বলে ওঠেন গফফার।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct