সামনের নভেম্বরের নির্বাচনে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রার্থী হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন মায়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক সংস্কারের পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে সু চির প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাকে। কয়েক দশকের সামরিক শাসনের কবলে থাকা মায়ানমারে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের নভেম্বরে। ওই নির্বাচনে দেশটির গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক হয়ে ওঠা শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি জয় লাভ করেন। সু চি নেতৃত্বাধীন মায়ানমার রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেলেও সেনাবাহিনীর জেনারেলদের সঙ্গে ক্ষমতার ভাগাভাগি করতে বাধ্য হয়। জয়লাভ করলেও স্বামী এবং সন্তান বিদেশি নাগরিক হওয়ায় তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বসতে পারেননি, পেয়েছেন রাষ্ট্রের ডি ফ্যাক্টো নেত্রীর পদ।
১৯৬২ সালে মায়ানমার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর সামরিক একনায়কতন্ত্রের অধীনে ১৯৯০ সালে দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় এনএলডি জয়ী হলেও ক্ষমতায় যেতে পারেনি। তৎকালীন সেনাশাসিত সরকার সু চিকে গৃহবন্দি করে। দীর্ঘদিন পর ২০১০ সালে গৃহবন্দি থেকে মুক্তি পান মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী এ নেত্রী। কয়েক দশক ধরে দেশটিতে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমরা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হলেও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা দেখায়নি। গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী হিসেবে পরিচিত সু চিও ছিলেন একেবারেই নীরব। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সু চির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলেও দেশের ভেতরে ব্যাপক জনপ্রিয় এই নেত্রী। ৭৫ বছর বয়সী সু চি মায়ানমারের প্রাক্তন রাজধানী ইয়াঙ্গুনের নির্বাচন অফিসে প্রায় ৫০ জন সমর্থক নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য একটি আবেদনপত্র দাখিল করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct