মদ্যপ পাত্রের সঙ্গে বিয়ে, প্রতিবাদে 'রূপশ্রী'র টাকা ফেরত দিল স্কুলছাত্রী।
অভাবী দিনমজুর পরিবারের পক্ষ থেকে মেয়ের বিয়ের জন্য রুপশ্রী প্রকল্পে বিডিওর কাছে আবেদন জানানে হয়েছিল। আবেদনের ভিত্তিতে ২৫ হাজার টাকাও পেয়েছিল ওই ছাত্রীর পরিবার। কিন্তু বিয়ের ঠিক কয়েকদিন আগে জানা যায় পাত্র মদ্যপ। স্বভাব চরিত্রও ভাল নয়। এই খবর কানে পৌঁছনোর পর বিয়ে ভেঙে দিতে বলেন পাত্রী। বন্ধ হয়ে যায় বিয়ে। সোমবার সরকারের থেকে পাওয়া ২৫ হাজার টাকা পাত্রী সপরিবারে এসে ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন পাথরপ্রতিমার বিডিও সীতাংশুশেখর সীটের হাতে। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সমীর জানা। বিয়ে ভাঙা ছাত্রী দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। এখন যথারীতি আবার স্কুলে যাচ্ছে ছাত্রী।
পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরের পয়লাঘেরির বাসিন্দা পবন মণ্ডল। পবন পেশায় দিনমজুর। ১৮ বছরের মেয়ে সন্ধ্যা মণ্ডল পড়ে স্থানীয় ব্রজবল্লভপুর ব্রজমোহন তেওয়ারি শিক্ষা নিকেতন। মাসখানেক আগে সন্ধ্যার বিয়ের একটি সম্বন্ধ আসে। পাত্র সাগরের সুমতিনগরের বাসিন্দা। পেশায় দিনমজুর। বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল ১০ জুলাই। পাত্রীর বাড়ি থেকে পাত্রকে আশীর্বাদ করতে যান। যাওয়ার পরেই পাত্রের প্রতিবেশীদের মুখ থেকে সব জানতে পারেন ছাত্রীর পরিবারের লোকজন। সব কথা সন্ধ্যাও শোনে। তারপর ছাত্রী নিজেই বিয়ে ভেঙে দিতে উঠেপড়ে লাগে। বন্ধ হয়ে যায় বিয়ে। এদিন স্কুলের পোশাকে বিডিও অফিসে এসেছিল ছাত্রী। বিডিওর হাতে সেই টাকা নিজেই ফেরত দিয়ে দেয়। এদিন সন্ধ্যা বলে,‘ বাড়ির জন্য বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। বিয়ের পাকা কথার পরও স্কুলে যেতাম। পরে পাত্র সম্পর্কে সব শোনার পর নিজেই বিয়ে বন্ধ করতে বলি। আবার স্কুলে যাব। পড়াশুনো করাই এখন আমার লক্ষ্য। আজ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে গেলাম।’ বিধায়ক সমীর জানা বলেন,‘ ওই ছাত্রী কন্যাশ্রী-২ প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকাও পেয়েছে। পরে বিয়ে ঠিক হওয়ায় সরকারের থেকে ২৫ হাজার টাকা পেয়েছিল। কিন্তু বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় টাকা ফেরত দিল। ছাত্রী আবার স্কুলে যাবে।’
ছবি: ওবায়দুল্লা লস্কর
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct