মাস কয়েক ধরে লকডাউন চলছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে। ফলে চাকরি বাকরি যেমন শিকেয় তেমনি ব্যবসা বাণিজ্যও লাটে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে বাবার ফল ব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত করা ছাড়া উপায় ছিল না এক উচ্চ শিক্ষিত তরুণীর। কিন্তু ব্যবসার মন্দা নিয়ে ওই তরুণী সংবাদ মাধ্যমের যাচ্ছে চোস্ত ইংরেজিতে লকডাউনের বিরোধিতা করেন তখন সবাই অবাক হয়ে যান। আসলে ওই তরুণী যে এখন রাস্তার ধারে একজন ফল বিক্রেতা বলেই লোকে জানে। তাই তরুণীর ইংরেজি শুনে তাকে ঘিরে ভিড় বাড়াতে থাকেন পথ চলতি মানুষজন। যদিও তিনি অবশেষে জানান, তাঁর পিএইচডি ডিগ্রি রয়েছে। আর পদার্থবিদ্যায় তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী।
ওই তরুণীর নাম রাইসা আনসারি। তার বক্তব্যের ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে৷ ইন্দোর শহরের মালওয়া মিল এলাকায় বাবার ব্যবসার জায়গাতেই ফল বিক্রি করেন ওই তরুণী৷ করোনা সংক্রমণ রুখতে ইন্দোরে বারবার লকডাউন জারি হওয়ায় তার প্রতিবাদে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হন।
রাইসা পদার্থবিদ্যায় এমএসসি করেছেন৷ ইন্দোরের দেবী আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে মেটেরিয়াল সায়েন্স নিয়ে পিএইচডি করেছেন। তার ক্ষোভ, শহরের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন জারি থাকায় মার খাচ্ছে ফলের ব্যবসা। ক্রেতা থাকছে না। এর ফলে পরিবারের মুখে নন যোগান কঠিন হয়ে উঠছে।
রাইসা সম্বন্ধেদেবী আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক রাজকুমার চৌহানও সোশ্যাল মিডিয়াতে রাইসাকে দেখে চিনতে পারেন। তিনি বলেন, রাইসা খুব পরিশ্রম করতেন। তাকে তার মেয়ের বিয়েতে নিমন্ত্রণ করলে রাইসা এক ঝুড়ি ফল উপহার দেন। কিন্তু তখন বুঝতে পারেন নি ঠিক কি কারণে ফল দিয়েছেন। আর এখন কেনই বা ফল বিক্রি করছেন রাইসা।
যদিও মনে আক্ষেপ নিয়ে রাইসা বলেন, করোনা ছড়ানোর মিথ্যা অপবাদ মুসলিমদের বিরুদ্ধে থাকায় তাকে কোথাও চাকরিতে নেওয়া হচ্ছিল না। শুধু স্কুল কলেজ নয়, প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই প্রত্যাখ্যান করছে। তাই বাবার ফল ব্যবসায় নাম ছাড়া গতি ছিল না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct