গালওয়ান উপত্যকায় চিনা হামলায় ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পর আরো জানা গেছে চিনা সেনাদের হাতে আহত ৭৬ জন জওয়ান বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হওয়ার পথে। এর মধ্যে সর এক চাঞ্চল্যকর খবর সামনে এসেছে। তা হল চিনা সেনারা বেশ কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে আটক করেছিল। লাদাখ সীমান্তে সোমবার চীনের সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষের আটক হওয়া ১০ জন ভারতীয় সৈন্যকে মুক্তি দিয়েছে চিন। সেনা সূত্রের বরাত দিয়ে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দুতে।
দ্য হিন্দু পত্রিকায় 'Days after clash, China frees 10 Indian soldiers' শিরোনামে সেনাবাহিনীর কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে লেখা হয়েছে, চিন আটক হওয়া ১০ জন ভারতীয় জওয়ানকে মুক্তি দিয়েছে। ছাড়া পাওয়াদের মধ্যে একজন লেফটেন্যান্ট-কর্ণেল এবং তিনজন মেজর পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। তবে সেনাবাহিনীর কোন কোন সদস্য নিখোঁজ ছিলেন তা এখনো সরকারি সূত্র জানায়নি। জানা গেছে মেজর জেনারেল পর্যায়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার পর চিন আটক ভারতীয় জওয়ানদের ছেড়ে দিয়েছে।
গালওয়ান উপত্যকায় হওয়া সংঘাতে অন্তত ২০ জন ভারতীয় সৈন্য নিহত হয় এবং সংঘাতের পর দুই দেশের মধ্যে এক ধরণের উত্তেজনা তৈরি হয়।
ঘটনায় আরো অন্তত ৭৬ জন ভারতীয় সৈন্য আহত হলেও চীন স্বীকার করেনি যে সংঘাতে তাদের কোনো সৈন্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
ইন্ডিয়া টুডে পত্রিকার সিনিয়র সম্পাদক শিভ আরুরের মতে, ভারতীয় সৈন্যদের মুক্তি দেয়া দুই দেশের আলোচনা সফল করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
দুই দেশের সৈন্যদের সংঘাতে যেই লোহার রড ব্যবহার হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, সেই পেরেক লাগানো রডের ছবি প্রকাশিত হওয়ার পর ভারতীয় সৈন্যদের মুক্তি দেয়ার খবরটি প্রকাশিত হয়। ইন্দো-চীন সীমান্তের একজন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা ঐ পেরেক লাগানো লোহার রডের ছবি পাঠান এবং দাবি করেন যে চীনের সৈন্যরা ঐ অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অজয় শুক্লা প্রথম এই ছবি টুইটারে দেন এবং এধরনের অস্ত্র ব্যবহারকে ‘বর্বরতা’ বলে বর্ণনা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তবে চীন বা ভারত কোনো দেশের সেনাবাহিনীই এই অস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে খাড়া পর্বতের প্রায় ১৪ হাজার ফুট (৪,২৬৭ মিটার) উচ্চতায় দুই দেশের সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে এবং কিছু সৈন্য পা পিছলে খরস্রোতা গালওয়ান নদীতে পড়ে গেছেন, যেখানে শৈল প্রবাহের তাপমাত্রা ছিল হিমাঙ্কের নিচে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct