অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি টানা তিন দিন ধরে জলে দাঁড়িয়ে থাকলো। কেউ তাকে নড়াতে পারলো না। তারপর মারা গেল। কেরালায় হাতিটির এমন মৃত্যু নিয়ে তীব্র সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আনারসের মধ্যে বিস্ফোরক ভরে হাতিটিকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছিল। হাতিটি তা খাওয়ার সময় মুখের মধ্যেই ফেটে যায়। হাতিটি মারাত্মকভাবে আহত হয়। তারপরও সে লোকালয়ে কোনো তাণ্ডব না চালিয়ে চলে যায়। এর আগেও পশুদের প্রতি আক্রমণের নানা ঘটনা ঘটলেও হাতিকে বিস্ফোরক খাওয়ানোর সাম্প্রতিক এই ঘটনাটি স্তম্ভিত করেছে স্থানীয়দের। মোহন কৃষ্ণান নামে বন বিভাগের র্যাপিড রেসপন্স টিমের একজন ফরেস্ট অফিসার ঘটনাটি নিয়ে ফেসবুকে একটি আবেগী পোস্ট করার পর এই ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারে মানুষ। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, 'আহত হওয়ার পরও হাতিটি কাউকে আঘাত না করে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। তারপর সে একাকি মূত্যু বরণ করে।' বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কথায়, হাতিটির বয়স আনুমানিক ১৪-১৫ বছর। আহত হওয়ার পর হাতিটি এতটাই শারীরিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিল যে সে টানা তিনদিন ভেলিয়ার নদীতে দাঁড়িয়ে ছিল। এই সময়ের মধ্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও হাতিটিকে জল থেকে সরানো সম্ভব হয়নি। তিনদিন ধরে হাতিটির মুখ এবং শুঁড় জলে ডোবানো ছিল। স্থানীয় একটি খামারের পাশে হাতিটিকে ২৫ মে প্রথমবার লক্ষ্য করে বন বিভাগ। পালাক্কাড় এলাকার সাইলেন্ট ভ্যালি নাশনাল পার্কের বন্যপ্রাণী বিভাগের ওয়ার্ডেন স্যামুয়েল ওয়াচা বলেন,' হাতিটি কোথায় আহত হয়েছিল তা আমরা জানতে পারিনি। জলের নিচে থেকে সে জল খাচ্ছিল, যা সম্ভবত তাকে কিছুটা আরাম দিচ্ছিল। হাতিটির চোয়ালের দুই পাশই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার দাঁতও ভেঙে গিয়েছে। পাল্লাকাড়ের মান্নারকাড় অঞ্চলের বন বিভাগ কর্মকর্তা সুনিল কুমার জানান, হাতিটি আহত হয়েছে বুঝতে পারার পর বন বিভাগের কর্মকর্তারা চেষ্টা করেছিলেন নদী থেকে হাতিটিকে সরিয়ে এনে তার চিকিৎসা দেওয়ার। কিন্তু হাতিটিকে কিছুতেই নদী থেকে সরানো যায়নি। পশু চিকিৎসকদের দিয়ে হাতিটির অপারেশন করানোর চেষ্টা করছিল বন বিভাগ। অবশেষে ২৭ মে নদীতে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই হাতিটি মারা যায়। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের পর জানা যায় যে হাতিটি অন্তঃসত্ত্বা ছিল।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct