ভুবনেশ্বর: ওড়িশা রাজ্যের বাসিন্দা দানামাঝির কথা খেয়াল আছে? অগাস্টের ২৫ তারিখ তার ছবি বেরিয়েছিল দেশ বিদেশের সব কাগজে, টিভিতে।
খবর ছাপা হয়েছিল কীভাবে স্ত্রীর মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে তিনি দশ কিলোমিটার হেঁটে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। পাশে চোখ মুছতে মুছতে হাঁটছিল তাঁর মেয়ে।
দেধের অন্যতমপিছিয়ে থাকা জেলা কালাহান্ডির হাসপাতাল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে মৃতা স্ত্রীকে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারেননি তিনি। অনেক অনু্রোধেও গাড়ি দেয় নি হাসপাতাল।
প্রায় দশ কিলোমিটার মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে হাঁটার পরে এক স্থানীয় টি ভি চ্যানেলের সাংবাদিক তাঁকে দেখতে পান। তিনিই জেলাশাসকের কাছে ফোন করে গাড়ি আনাবার ব্যবস্থা করেন।
তার দুর্দশার খবর সংবাদপত্রে পড়ে জানতে পারেন বাহরাইনের প্রধানমন্ত্রী বাদশাহ খলিফা বিন সালমানআলিখলিফা। দানামাঝির দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন খলিফা। দিল্লির বাহরাইন দূতাবাসে পৌছয় রাজার পাঠানো প্রায় নয় লক্ষ টাকার চেক।
সেই চেক নিতেই বৃহস্পতিবার জীবনে প্রথমবার বিমানে চেপে দিল্লি গিয়েছিলেন দানামাঝি। ওড়িশার কয়েকজন বিধায়কও তার হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন।
সাহায্য এসেছে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকেও। রাজধানী ভুবনেশ্বরে আদিবাসী শিশুদের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দায়িত্ব নিয়েছে তার তিন মেয়ের আজীবন পড়াশোনার।
মেয়েদের সেই স্কুলে ভর্তি করে দিয়েই দিল্লির বিমান ধরেন তিনি। রাজার চেক নিতে যাওয়ার সময়েও তার পড়নে ছিল নীল লুঙ্গি আর একটা পুরনো জামা। কাঁধে গামছা।
বাহরাইন দূতাবাসে সংবাদ মাধ্যমকে মাঝি নীল রঙের চেকটা দেখান। ব্যাঙ্ক অফ বাহরাইন এন্ড কুয়েতের ওই চেকে লেখা টাকার অঙ্কটা ৮,৮৭,৯৪৯ ।
সংবাদ মাধ্যমকে মাঝি জানান এই সব টাকাই তিনি ব্যাঙ্কে দীর্ঘমেয়াদী আমানত হিসাবে রেখে দেবেন, যাতে তার মেয়েদের পড়াশোনার জন্য খরচ করতে পারেন।
তার মেয়েদের পুলিশ বা ডাক্তার করার ইচ্ছা দানামাঝির।
সূত্র: বিবিসি
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct