ঘাতক বলে একেই! মাত্র ১০০ দিনে ৮ লাখ মানুষকে হত্যা করানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ২৬ বছর পর ধরা পড়ল ফ্রান্স। আফ্রিকান দেশ রুয়ান্ডা গণহত্যার অন্যতম নায়ক সেই ব্যক্তি ফেলিসিয়ে কাবুগা। অবশেষে শনিবার তাকে ফ্রান্স গ্রেফতার করে গৃহবন্দি রাখা হয়েছে বলে জানিয়ে ফরাসি সরকার। রুয়ান্ডার ৮৪ বছর বয়সী এই প্রাক্তন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১০০ দিনে আট লাখ মানুষ হত্যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থ সাহায্য করেছিল।
১৯৯৪ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ১০০ দিনের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছিল রুয়ান্ডার প্রায় আট লাখ নাগরিক। ২৫ বছর আগে শুরু গণহত্যার শিকার অধিকাংশই সংখ্যালঘু তুতসি সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল। গণহত্যা পরিচালনাকারীরা ছিল হুতু সম্প্রদায়ের। যদিও রুয়ান্ডাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, কিন্তু তারপরও এত অল্প সময়ে বিশালসংখ্যক মানুষকে হত্যা করার কথা চিন্তা করাও ছিল কল্পনাতীত।
শনিবার ফ্রান্সের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নিজের পরিচয় লুকিয়ে কাবুগা প্যারিসের একটি আবাসিক ফ্লাটে বসবাস করে আসছিলো। কাবুগার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় গণহত্যা চালানো ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে। আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার মোস্ট ওয়ান্টেড এই ব্যক্তির মাথার মূল্য ৫০ লাখ ডলার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
রুয়ান্ডার দুটি মূল নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠী হুতু ও তুতসি। ঐতিহাসিকভাবে দুটি গোষ্ঠী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বি। ১৯৯০ এর দশকে জনগোষ্ঠী দুটি গৃহযুদ্ধে জড়ায়। হুতু ব্যবসায়ী ফেলিসিয়েন কাবুগার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে একশো দিনের মধ্যে আট লাখ তুতসিকে হত্যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘের গঠিত একটি আদালত কাবুগাকে ১৯৯৭ সালে সাত ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। তবে তার আগেই সে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
শনিবার ফ্রান্সের বিচার মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রুয়ান্ডা গণহত্যার অর্থদাতা হিসেবে পরিচিত ফেলিসিয়েন কাবুগা ১৯৯৪ সাল থেকে জার্মানি, বেলজিয়াম, কঙ্গো-কিনশাসা, কেনিয়া কিংবা সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে বিচার এড়িয়ে গেছে। ওই বিবৃতিতে জানানো হয় গ্রেফতারের পর এই পলাতক ব্যক্তিতে প্যারিসের আপিল আদালতে তোলা হবে আর পরে তাকে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct