লকডাউন চলতে থাকে এবার মুসলিমদের পবিত্র উৎসব ঈদের নামাজ একসাথে পড়া নিয়ে সংশয়। ১৭ মে তৃতীয় লকডাউনের মেয়াদ শেষ হলেও তার বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই আঁচ পেয়ে এবার কলকাতায় রেড রোডে এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম ঈদের নামাজ এবছর হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ওই নামাজের আয়োজক খিলাফত কমিটি। শুধু রেড রোড নিয়ে কলকাতার শীর্ষ মসজিদ নাখোদা মসজিদ, দুটি টিপু সুলতান মসজিদ সহ রাজ্যেও কোনও মসজিদে বা ঈদগায় ঈদের দিন একসঙ্গে নামাজ আদায় করা যাবেনা বলেও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে। সারা দেশে করোনা সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষন নেই। কলকাতায় সংক্রমণ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রেড রোডে ঈদের নামাজ স্থগিত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে কলকাতা খিলাফত কমিটি। খিলাফত কমিটিই কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামের সামনে রেড রোডে শুধুমাত্র ঈদের দিন সকালে এই ঈদ নামাজের আয়োজন করে। এই নামাজে কলকাতা ও শহরতলী থেকে যেমন মানুষ আসেন তেমনি প্রতিবেশি রাজ্যের অনেক মুসলিমও ঈদের এই নামাজে অংশগ্রহন করেন।
রেড রোডে প্রায় ৩-৪ লাখ মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন। তাই অনেকের ইচ্ছা ছিল সেখানে গিয়ে নামাজ পড়া। কিন্তু খিলাফত কমিটির চেয়ারম্যান শাকির রেনডারিয়ান জানিয়ে দিয়েছেন, রেড রোডে ঈদের নামাজ হবে কিনা তা নিয়ে আমরা টেলিকনফারেন্সে আলোচনা করেছি। সকলেই একমত হয়েছেন যে, নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই রেড রোডের আয়োজন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, রেড জোনের আওতায় থাকা কলকাতায় পারস্পরিক দূরত্বের বিধি না-মেনে রেড রোডে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগমে ঈদের নমাজ আদায় বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই এই সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে রেড রোডের ঈদের নামাজ পরিচালনাকারী ইমাম এ ঈদায়েন ক্বারী ফজলুর রহমান বলেন, নাগরিকদের নিরাপত্তাই সবচেয়ে বড় কথা। তাই এই সঙ্কটের সময়ে রেড রোডে নামাজ আদায়ের অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এ বার মসজিদ বা ঈদগায় ঈদের নামাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন মসজিদেই ঈদের নামাজে সাধারণের অংশগ্রহন থাকবে না। মসজিদের লোকেরাই নামাজ আদায় করবেন। রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান সাবেক বিচারপতি আব্দুল গনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাস বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা থেকে বাঁচতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা ভীষণ জরুরি। তাই ঈদে মসজিদ বা ইদগায় জমায়েত না-করে বাড়িতে নামাজ আদায়ের জন্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফে রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার মসজিদে নোটিশ পাঠানো হচ্ছে। ঈদের নামাজটাও একটু কষ্ট করে নিজের নিজের বাড়িতে সপরিবারে আদায় করার আবেদন জানানো হয়েছে।