উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যানাথ সরকার সেখানকার মুসলিমদের উপর নানা দমন পীড়ন চালালেও হিন্দু মুসলিম সম্প্রীতি রক্ষায় কোনো কমতি নেই। লকডাউনের মধ্যে এক হিন্দু বৃদ্ধ, যিনি আবার পুরোহিত, তিনি মারা যাওয়ায় তার মৃতদেই শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো আত্মীয়কে পাওয়া যায়নি। তাই প্রতিবেশী মুসলিমরাই তার মৃতদেহ কাঁধে করে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করলেন। আর তাই উত্তরপ্রদেশের মিরাট শহর হয়ে উঠল সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের অনন্য নজির।
মিরাটের শাহপীর গেট এলাকায় স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে থাকতেন পুরোহিত রমেশ মাথুর (৬৮)। মঙ্গলবার হঠাৎ করেই মারা যান তিনি। কিন্তু ওই সময় বড় ছেলে ও স্বজনরা দিল্লিতে অবস্থান করছিলেন। লকডাউনের জন্য কেউ মিরাটের বাড়িতে আসতে পারছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে পুরোহিতের শেষকৃত্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয় মুসলিম যুবকরা। গাঁদা ফুলের মালায় জড়ানো পুরোহিতের মরদেহ কাঁধে তুলে নেন সাদা টুপি পরা সেসব যুবক। সোজা শ্মশানে নিয়ে মৃতের সৎকারে সাহায্য করেন তারা। ওই পুরোহিত ছিলেন কায়স্থ ধর্মশালার মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত। তাই সাদা টুপি পরে মুসলিম যুবকদের পুরোহিতকে কাঁধে করে নিয়ে যাওয়ার সেই দৃশ্য এখন ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। ওই যুবকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা। রোজা রেখে ও করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে যুবকদের এমন মানবিকতা প্রশংসা পাচ্ছে।
ওই পুরোহিতের ছোট ছেলে চন্দ্র মৌলি মাথুর জানিয়েছেন, বাবার খাদ্যনালীতে একটা টিউমার ছিল। অনেকদিন ধরে চিকিত্সা চলছিল। মঙ্গলবার হঠাত্ করে তিনি মারা যান। আমার দাদা দিল্লি থেকে ফিরতে পারেননি। লকডাউনে কোনো আত্মীয়-স্বজনও আসতে পারেননি। এই সময় প্রতিবেশীরাই আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। বাবার দেহ নিয়ে যান শ্মশানে। তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকার সব মুসলিমরা আমাদের ভাইয়ের মতো। তারা এভাবে এভিয়ে আসবে ভাবতে পারিনি। জাত ধর্ম ভুলে এভাবে মুসলিমরা এগিয়ে আসে দেশের সম্প্রীতির ঐতিহ্য আরও সুদৃঢ় হল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct