সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্রীড়াবিদদের আধিপত্য অন্যতম আলোচিত বিষয়ে হিসেবে রূপ নিয়েছে। সর্বশেষ রাজনীতিতে চমক জাগিয়ে শিরোনামে উঠে এসেছেন পাকিস্তানের একমাত্র ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইমরান খান।
ক্রিকেটের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় অবসর-পরবর্তী সময়ে প্রবেশ করেন পাকিস্তানের রাজনীতিতে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংসের ঘটনাবহুল ‘দেড় দশক’ অতিক্রমের পর ক্ষমতার শিখরে বসে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগও ধরা দিয়েছে তার সৌভাগ্যে। তবে খ্যাতনামা ক্রীড়াবিদদের রাজনীতিতে সাফল্য বিচারে ১৯৯২ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী পাকিস্তানের অধিনায়ক ইমরান খানই একমাত্র ব্যক্তিত্ব নন। পেশাদার ক্রীড়াজীবন সমাপ্তির পর রাজনৈতিক অঙ্গনে সর্বোচ্চ আলোচিত তিন খেলোয়াড়কে নিয়েই এই প্রতিবেদন।
জর্জ উইয়াহ
ক্রীড়াবিদ থেকে রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে সাফল্যের শিখরে পা রাখার অনন্য দৃষ্টান্ত লাইবেরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জজ উইয়াহ। ছোট দেশের বড় তারকা হিসেবে ইউরোপীয় কাব ফুটবলে বাজিমাতের পর দেশকে এগিয়ে যেতে দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত সময় কাটছে তার। ১৯৮৯ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী লাইবেরিয়ার ভয়াবহ গৃহযুদ্ধকালীন সময়ে এসি মিলান, প্যারিস সেন্ট জার্মেই ও চেলসির মতো কাবে পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করেন উইয়াহ। আফ্রিকা মহাদেশের একমাত্র ফুটবলার হিসেবে ব্যক্তিগত অর্জনের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ফিফা বর্ষসেরা ও ব্যালন ডি’অর জয়ের কৃতিত্বও রয়েছে তার দখলে।
মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন
ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল অধিনায়ক আজহারউদ্দিন। দলনায়ক হিসেবে শতকোটি ভারতীয় জনগণের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রীড়া ক্রিকেটকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন অনন্য উচ্চতায়। তার ১৬ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে সমাপ্তির ইতিহাস সুখকর হয়নি। ফিক্সিং ইস্যুতে বিসিসিআই আজীবন ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হওয়ার পর ও বাধ সাধতে পারেনি দেশীয় রাজনীতিতে আজহারউদ্দিনের সফল উত্থানে। ২০০৯ সালে ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ক্রিকেটার থেকে অবসরের পর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বেছে নেয় অধিনায়ক। ২০১২ সালে অন্ধ প্রদেশ হাইকোর্ট যথেষ্ট প্রমাণ না থাকায় আজহারউদ্দিনকে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়।
গ্যারি কাস্পারভ
ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দাবাড়ু– হিসেবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন রাশান গ্রান্ডমাস্টার কাস্পারভের। ২০০৫ সালে দাবা থেকে অবসর-পরবর্তী সময় রাজনৈতিক ও লেখক হিসেবে ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠতায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন। সদ্য তিনি যোগ দেন ‘দ্য আদার রাশিয়া’ আন্দোলনের সাথে। বর্তমানে ক্ষমতাসীন ভ্লাদিমির পুতিনবিরোধী জোট হিসেবে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় কাস্পারভের রাজনৈতিক অ্যালায়েন্স। ২০০৯ সালে পুতিনের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন দেশটির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ দাবাড়ুর। রাশিয়ার ইতিহাসের অন্যতম ক্ষমতাধর রাষ্ট্রনায়কের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণের ফলাফল মোটেও সুখকর হয়নি কাস্পারভের বেলায়। পুতিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রচুর অনিয়মের অভিযোগ তোলায় দেশও ছাড়তে হয়েছে তাকে। বর্তমানে ক্রোয়েট নাগরিক হিসেবে তিনি ক্রোয়েশিয়ায় বসবাস করছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct