রাজ্যের বিভিন্ন বস্তিতে থাকা বেশির ভাগ মানুষের মধ্যেই করোনা নিয়ে তেমন সচেতনতা নেই। আবার অপরিষ্কার বস্তির একেকটি ঘরে একসঙ্গে গাদাগাদি করে অনেক মানুষ বসবাস করে। এতে থাকছে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিও। উদ্বেগ প্রকাশ করে কুলসুম নামের এক বস্তির মেয়ে বলেন, ‘আমরা বস্তির অনেক মানুষ একসঙ্গে একটি বাথরুম ও টয়লেট ব্যবহার করি। শুনছি করোনা রোগ ছোঁয়াচে আর বস্তিতে কারও এই রোগ হলে তা অন্যদের মধ্যে ছড়াতে বেশিক্ষণ লাগব না।' কুলসুমের মতো রাজ্যের অন্য বস্তিবাসীরাও এখন ঝুঁকি নিয়ে বাস করছেন। সাধারণত রিকশাচালক, গৃহকর্মী, গার্মেন্ট কর্মী, ভ্যানচালক ও হকারের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ বস্তির অস্বাস্থ্যকর ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকতে বাধ্য হন। আর এ ধরনের পরিবেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। বস্তিবাসীরা জানান, জীবন ও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে জনসমাগম বেশি হয় এমন স্থানে তাদের যেতে হচ্ছে। আবার পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করতে না পারার সীমাবদ্ধতা বস্তিবাসীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি কারণ। অথচ শহুরে মানুষ যেখানে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকতে মুখে মাস্ক এবং হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করছেন। সেখানে বস্তিবাসীর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজনকে মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়। আর হ্যান্ড স্যানিটাইজার তো তাদের কাছে এক ধরনের বিলাসী পণ্য। বস্তির অনেকেই আছেন, যাদের ভালোমতো সাবান দিয়ে হাত ধোয়ারও সুযোগ নেই। এরই মধ্যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় কলকাতার বাড়ি ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে শুরু করেছেন। এতে নিন্ম আয়ের এই মানুষদের আয়-রোজগার কমে এসেছে। অনেককেই দুই বেলা খাবার জোগাড় করতে গিয়ে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে। আবার কেউ কেউ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গুজবের ফাঁদে পড়ে থানকুনি পাতা খাচ্ছেন, কেউ আবার ঝাড়ফুঁক করাচ্ছেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct