সারিফুল আলম, দিল্লি
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২১ দিনের জন্য দেশের সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছেন।। লকডাউনের এই ঘোষণাটি সমাজের প্রান্তিক শ্রেণী মজদুর ও শ্রমিকদের উপর কিরকম বিরূপ প্রভাব পড়বে তা বিবেচনায় না নিয়েই তা করা হয়েছিল। নির্দিষ্টকোনও পরিকল্পনার অভাবে আকস্মিকভাবে লকডাউনের ফলে হাজারো শ্রমিক রাজধানীতে আটকে রয়েছে।যাদের অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে।এখনও পর্যন্ত সরকার সেরকম কোন ব্যবস্থা নেইনি।মূলত বিহার,উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকদের পরিমাণই বেশি। বাদ যায়নি বাঙালী খেটে খাওয়া মানুষরাও।
মালদার মানিকচকের বাসিন্দা আইয়ুব।দিল্লিতে তিনি পেশায় রিক্সাচালক।লকডাউনের ফলে মূলত অনাহারেই কাটাতে হচ্ছে।বাড়ি যাওয়ার জন্য একপ্রকার কাতরাচ্ছেন যেন।আইয়ুব বলেন,"লকডাউনের ফলে আর কোন কাজ হচ্ছে না।টাকাপয়সা আর নেই হাতে।খাবারের কোন ব্যবস্থা নেই।অনাহারে কাটাতে হচ্ছে। কি করব কিছু বুঝতে পারছি না।" তিনি আরও বলেন,"যে করেই হোক আমি বাড়ি পৌছাতে চাই।পরিবারের লোকজন চিন্তায় কান্নাকাটি করছে।" সরকারের উদ্দেশ্যে আইয়ুব আবেদন করে বলেন," জোর হাত করে বলছি সরকার আমাদের জন্য কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিক।বাড়ি ফেরতের জন্য কিছু একটা করুক।আর সেটা সম্ভব না হলে আপাতত বেচে থাকার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করুক"।
এদিকে রাজধানীতে আটকে থাকা হাজার হাজার মজদুর পায়ে হেটেই বাড়ির জন্য রওনা দিচ্ছেন।দিল্লি থেকে মধ্যপ্রদেশের ঝাসির দিকে রওনা দেওয়া প্রভু দয়াল নামে এক ব্যক্তি বলেন,"কাজ তো আর কিছু নেই।হাতে আর কোন পয়সা নেই।মোবাইল বিক্রি করে ২দিন খাবারের ব্যবস্থা করেছি।এখন অনাহারে মৃত্যুর থেকে পায়ে হেটেই বাড়ি যাওয়া ভালো।বাড়ি পৌছাতে পারবো কিনা জানিনা।সরকার কোনকিছু ব্যবস্থা করেনি আমাদের জন্য।পরন্তু পুলিশ আমাদের মারধর করেছে। "
এদিকে রাম স্বরুপ নামের এক ব্যক্তি দিল্লি থেকে সাহরানপুরের দিকে পায়ে হেটেই রওনা দিয়েছেন।ক্রন্দনরত অবস্থায় তিনি বলেন,"আমি জানি করোনা ভাইরাসের ভয় রয়েছে, তবে আমরা অসহায়। তিন সপ্তাহ ধরে কোনও আয় ছাড়া আমরা কীভাবে বাঁচব?যেহেতু বাস-ট্রেনের ব্যবস্থা নেই , তাই আমরা হেটেই বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct