করোনা ভাইরাসের প্রকোপ চিনে কমতে থাকলেও সেখানে এখন নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠেছে 'হান্টা ভাইরাস’। সোমবার চিনে 'হান্টা ভাইরাস’এ একজনের মৃত্যু হয়েছে। ইউনান প্রদেশে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয় একটি চার্টার্ড বাসে করে যখন টি ই শানদং প্রদেশে যাচ্ছিলেন। পরীক্ষা করে তার মধ্যে ভাইরাসটি সনাক্ত করা হয়। এর পর এই ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু দেখা যেতে পারে এই 'হান্টা ভাইরাস’ কি এবং কতটা মারাত্মক।
'হান্টা ভাইরাস’ কী ও এর উপসর্গ
'হান্টা ভাইরাস’ মূলত ইঁদুরজাতীয় প্রাণির মাধ্যমের ছড়ানো একগুচ্ছ ভাইরাস। এতে হরেক রকমের রোগের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। হান্তা ভাইরাস অঞ্চলের উপর ভিত্তি করে একেক জায়গায় একেক নামে পরিচিত। যেমন, ইউরোপ ও এশিয়ায় এটি ‘ওল্ড ওয়ার্ল্ড’ 'হান্টা ভাইরাস’ নামে পরিচিত। অন্যদিকে, আমেরিকার এটি ‘নিউ ওয়ার্ল্ড’ 'হান্টা ভাইরাস’ নামে পরিচিত। এতে সংক্রমিত হলে, ফুসফুসজনিত সমস্যা দেখা দেয় (এইচপিএস)। এক্ষেত্রে রোগীর মধ্যে অবসাদ, জ্বর ও পেশিতে ব্যথা, বিশেষ করে উরু, মাজা, পিঠ ও কখনো বাহুতে ব্যথা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, কেউ কেউ মাথাব্যথা, মাথাঘোরা ও পেটের নিম্নভাগে সমস্যায় ভুগতে পারেন। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হওয়ার চার থেকে ১০ দিন পর কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এতে অনেকের মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে।
ভাইরাসটি কি নতুন?
না নতুন নয়। এর আগে ২০১২ সালে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তাতে অন্তত চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। সিডিসি অনুসারে, আমেরিকায় ভাইরাসটির অস্তিত্ব প্রথম ধরা পড়ে ১৯৯৩ সালের নভেম্বরে। দেশটির চারটি রাজ্য- নিউ মেক্সিকো, আরিজোনা, কলোরাডো ও উটাহ অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ভাগ করা একটি অঞ্চলে এক ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
এটি কি মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়?
না ছড়ায় না। 'হান্টা ভাইরাস’ মূলত ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর মাধ্যমে ছড়িয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা তুলনামূলক কম ও বিচ্ছিন্ন। এটির মহামারী পর্যায়ে বিস্তার লাভের ঘটনা জানা যায়নি। সিডিসি অনুসারে, সাধারণত প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে যেখানে এই ভাইরাসের বাহক ইঁদুরগুলোর বাস করে, সেসব এলাকায় এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
এই ভাইরাসে মানুষ কি আক্রান্ত হতে পারে?
ভাইরাসে আক্রান্ত ইঁদুরের মূত্র, লালা ও বিষ্ঠার মাধ্যমে ভাইরাসটি (এইচপিএস) ছড়িয়ে থাকে। মূলত এসবের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা বাতাসে মিশে গেলে ও সে বাতাস নিঃশ্বাসে নিলে মানুষ ভাইরাসটি মানুষের দেহে বিস্তার করে। এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ইঁদুরের কামড় খেলেও এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ভাইরাসে আক্রান্ত কোনোকিছু হাত দিয়ে ধরে সে হাত মুখে স্পর্শ করলেও আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে এমন সক্রামনের সম্ভাবনা কম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct