গত ১০ বছর ধরেই মিরপুরে যেসব জমিতে তামাকের দাপট দেখা গিয়েছে, এখন সেই সব জমিতে তামাকের পরিবর্তে উঁকি দিচ্ছে রসালো তরমুজের চারা। একসময় আখের দখলে থাকা যেসব জমিতে তামাক দখল নিয়েছিল, এখন সেই জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন তামাক কোম্পানির প্রণোদরার ফলে বিগত দিনে তামাক চাষে ঝুঁকতো কৃষক। তবে এবারে তামাক চাষ থেকে অনেকটা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন কৃষক। বিগত দিনে তামাক চাষের কারণ হিসেবে কোম্পানির প্রলোভন ও কৃষকদের অসচেতনতাকে দায়ী করছেন। এলাকায় একেবারেই নতুন হলেও তরজুম চাষে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন যেকোনও আবাদ করেই তামাককে নীল চাষের মতো বিতাড়িত করার পরিকল্পনা করছেন তারা। কুষ্টিয়ার মিরপুর হ এলাকার কৃষক শেরেগুল ইসলাম লেখাপড়া শেষে চাকরি করতেন একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানে। পাশাপাশি ৫ বছর ধরে তামাক চাষ করে আসছিলেন তিনি। গত বছর চাষ করেছিলেন ৩ বিঘা জমিতে তামাক। তবে এবছর কোনো তামাক চাষ করেননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'তামাকে মূলত লাভ হয় না। নিজে কাজ করতে পারলে একসঙ্গে কিছু টাকা পাওয়া যায়। তবে শ্রমিক নিলে কিছুই পাওয়া যায় না। পরিবারের সবাই মিলে পরিশ্রম করা লাগে। বাড়িতে রোগ-জীবাণুর উপদ্রব বেশি হয়। তামাক কোম্পানি আমাদের সার, বীজ, কীটনাশক ও পরামর্শ দিয়ে তামাক চাষে উৎসাহী করেছিল। তবে গতবার আমার তিন বিঘা জমির তামাক শিলা বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কোম্পানি সেই তামাক আর কিনেনি। তাই এবছর রাগ করে আর তামাক লাগাইনি।' তিনি আরও বলেন, 'যতদিন বাঁচবেন এই তামাক চাষ করবেন না উল্লেখ করে বলেন, কোনোদিন আর এই তামাক করবো না। আমি এবছর তামাকের পরিবর্তে দেড় বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছি। আর এক বিঘা জমিতে বেগুন ও ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। নতুন হলেও তরমুজ গাছ বেশ ভালোই হয়েছ। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি তরমুজের সাথী ফসল হিসেবে একই জমিতে টমেটো চাষ করেছি।'
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct