ফারুক আহমেদ
বাংলার যুবকরাই সবসময় দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন। এদেশের যে কোনও বিষয়ে সঠিক রাস্তা দেখিছে বাংলা।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও দেশের সাধারণ মানুষের মনের ভয় দূর করতে পথে নেমেছেন। সভা-সমাবেশ আন্দোলন করছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে জোরালো ভূমিকা পালন করে আন্দোলন করছেন। দেশবাসীকে আশার আলো দেখিয়ে লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভারতের মহান নেত্রী। তাঁর দেখানো পথেই ভারত এগিয়ে যাবে সামনে আরও সামনে।
আইন হাতে তুলে নয় দেশের মানুষের কল্যাণে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশ-আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অখণ্ড ভারতকে রক্ষা করতেই হবে এটাই হোক আমাদের অগ্নিশপথ।
নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে উদার সহিষ্ণু ভারতের কোটি কোটি মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে সংবিধানকে সামনে রেখে সভা-সমাবেশ করে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন। বিভেদকামী সরকারের পতন সুনিশ্চিত করতে জনাতার একতা দেখে মুগ্ধ হই। জাতীয় সম্পত্তি নষ্ট করে এবং সাধারণ মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করে যারা আন্দোলন করছেন, তাদেরকে এই অমানবিক কাজ থেকে বিরত থাকতে আহ্বান করছি।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কুর্নিশ দেশের সাধারণ মানুষের মনের ভয় দূর করতে পথে নেমেছেন এবং নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বাতিল করতে জোরালো ভূমিকা পালন করে আন্দোলন করছেন।
১৯৪৭ সালে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে দেশ ভাগ হয়েছিল। মহম্মদ আলী জিন্নাহ বলেছিলেন হিন্দু আর মুসলমান পৃথক জাতি, তাই দুটি আলাদা দেশ হওয়া দরকার। হিন্দু মহাসভার নেতা সাভারকারও একই নীতিতে বিশ্বাস করতেন। কিন্তু ভারতের সংবিধান প্রণেতারা জিন্নাহ বা সাভারকারের পথ নেননি। তাঁরা ভারতবাসীকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ, সার্বভৌমত্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৭২ বছর পর ক্যাব-এর নামে দ্বিজাতিতত্ত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে চাইল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের সরকার। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানকে রক্ষা করতেই হবে দেশবাসীকে। সব সম্প্রদায়ের মানুষজনের মিলিত প্রয়াসে গণতান্ত্রিক উপায়ে সুশৃঙ্খল আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে অখণ্ড ভারতকে রক্ষা করবই এটাই আমাদের অগ্নিশপথ।
আরব, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে উড়ে আসিনি আমরা। ভারতের আদি ভূমিপুত্র আমরাই।
এক সময় বিদেশ থেকে আগত তথাকথিত উচ্চবর্ণের লোকজনের নির্মম অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মাথা উঁচু করে বাঁচতে নিম্নবর্গের হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন অনেকেই।
আমরা সবাই জানি স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আরএসএস তথা হিন্দু মহাসভার নেতারা বিরোধিতা করেছিলেন, আজ তাদের উত্তরসূরিদের কাছে দেশপ্রেম শিখব না। দেশের স্বাধীনতার জন্য সাধারণত আমাদের অবদান সব থেকে বেশি। ভুলে গেলে চলবে না।
যারা বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে তারা দেশের সাধারণ মানুষের কখনও কল্যাণ করতে পারে না, তা আমরা দেখছি নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ সরকারের শাসনকালে।
চিটিংবাজ ব্যাবসায়ীরা দেশের হাজার হাজার কেটি টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়েছেন, তাদেরকে ধরে আনতে বিজেপির সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
কালো টাকা ফেরত আনতে পারেন নি নরেন্দ্র মোদীর সরকার।
সাধারণ মানুষের একাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা ডুকিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদী এই প্রতিশ্রুতিও পূরণ করতে পারেন নি।
ব্যাঙ্ক জালিয়াতির ফলে প্রতিদিন কত সাধারণ মানুষ নিঃশব্দে শেষ হয়েছেন এবং হচ্ছেন।
টাকা পরিবর্তন করার সময় সাধারণ মানুষকে কত হয়রানি হতে হয়েছে।
দেশে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চরমভাবে নরেন্দ্র মোদী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আর্থিক মন্দা। দেশের সাধারণ মানুষ দিন দিন দিশেহারা বোধ করছেন।
সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে উপযুক্ত রোজগারের সুযোগ সুবিধা থেকে অসংখ্য মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। তার প্রতিকার করতে সরকারের উচিত সহনশীল মন নিয়ে গুরুত্ব দেওয়া এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
দেশের জনতা নাগরিকত্ব আইন-এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন। এই মহান ভূমিকা পালনের জন্য দেশবাসীকে কুর্নিশ জানাই।
মিশ্র সংস্কৃতিই আমাদের অর্জিত বৈভব তা আমরা রক্ষা করবই।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct