জম্মু: কাশ্মীরে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা অচলাবস্থায় এবার বন্ধ করা হলো একাধিক সংবাদপত্র। শুক্রবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাতে কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে একাধিক উর্দু ও ইংরেজি সংবাদপত্রের প্রকাশনা বন্ধ করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, শ্রীনগরের র্যা্নগ্রেথ ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে প্রথমে অভিযান চালায় বিশাল পুলিশ ও সেনাবাহিনী। কাশ্মীরের স্থানীয় পত্রিকা ‘গ্রেটার কাশ্মীর’এর প্রকাশনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পত্রিকাটির অনলাইন ভার্সনে এ কথা জানানো হয়েছে। তারা জানান, প্রকাশনা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করে ‘গ্রেটার কাশ্মীর’ সংবাদপত্রের কয়েকটি প্লেট ও ‘কাশ্মীর উজমা’ পত্রিকার পঞ্চাশ হাজার কপি। এ সময় পুলিশ প্রকাশনা কর্মীদের গালাগালি এবং মারধরও করে। ছাপাখানা ‘কে টি প্রেস’-এর মালিক রাজা মহিউদ্দিন জানান, তার ছাপাখানায় ‘কাশ্মীর রিডার’, ‘কাশ্মীর টাইমস’, ‘কাশ্মীর অবজার্ভার’, ‘দ্য কাশ্মীর মনিটর’ ইত্যাদি একাধিক সংবাদপত্র ছাপা হয়। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করেই পুলিশ বন্ধ করে দেয় প্রেস। আমাদের তিন জন কর্মীকেও গ্রেফতার করে।’ ‘রাইজিং কাশ্মীর’ সংবাদপত্রের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভোর চারটার দিকে লাল চক এলাকায় পৌঁছায় তাদের পত্রিকার গাড়ি। বিক্রিও শুরু হয়। হঠাৎ পুলিশ এসে সব কপি উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়। জম্মু-কাশ্মীরের দশটি জেলায় এখনও জারি রয়েছে কারফিউ। আট দিনেও কাটেনি অচলাবস্থা। বুরহানের জন্মস্থান ত্রাল এখনও বিক্ষুব্ধ। প্রতিদিনই সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে জনগণ। এছাড়াও কাশ্মীরের বিভিন্ন অঞ্চলে কারফিউ ভেঙে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে স্থানীয় জনতা। এমন অবস্থায় দূর-দূরান্তের গ্রামেও কারফিউ জারি রয়েছে। বিচ্ছিন্ন রয়েছে টেলি যোগাযোগ। শনিবার কুপওয়ারা এলাকায় পুলিশ চেকপোস্টের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে প্রতিবাদী জনতা। সেখানে সেনা জওয়ানদের গুলিতে নিহত হন একজন। কুপওয়ারা ছাড়াও আরও কিছু এলাকা থেকে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। চলমান সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪১ জনে। উল্লেখ্য, ৮ জুলাই অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল যোদ্ধা নিহত হন। বুরহানের নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে কাশ্মীর জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ কাশ্মিরিদের দাবি, বুরহানকে ‘ভুয়া এনকাউন্টারে’ হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কিছু অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে গেলে কাশ্মীরের দশটি জেলা, এমনকি দূরবর্তী গ্রামেও কারফিউ জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: