মালদা: বিরল চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার করে সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক জুড়ল মালদা মেডিক্যাল কলেজ। এবার নি জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের মতো কঠিন অস্ত্রোপচার করে সফল হলেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকদের দাবি, এ ধরণের অস্ত্রোপচার মালদা জেলায় প্রথম। এর আগে মালদার কোনও হাসপাতাল কিংবা বেসরকারি নার্সিংহোমেও হয় নি। চিকিৎসকেরা জানানিয়েছেন, দু’দিন পর থেকে ওই রোগী ওয়াকার নিয়ে হাঁটাচলা করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবে খুশি রোগীর পরিজনেরা। দীর্ঘ ১ বছর ধরে তাঁদের রোগী শয্যাশায়ী। এবার নিজের মতো হাঁটাচলা করবেন, আনন্দাশ্রু আর ধরে রাখতে পারলেন না রোগীর স্বামী অতুল মন্ডল।
জানা গেছে, কালিয়াচক থানার বীরনগর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেগুনটোলা গ্রামের বাসিন্দা অতুল মন্ডল পেশায় চাষি। তাঁর স্ত্রী কুসুম মন্ডল টানা এক বছর ধরে অসুস্থ। দু’পায়ের হাঁটুতে চরম ব্যথা। হাঁটাচলা করতে পারেন না। মালদা-সহ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করানো হয়েছে তাঁর স্ত্রী। তবুও সুস্থ হতে পারেন নি। এদিকে নিতান্তই গরিব পরিবার তাঁদের। চিকিৎসা করাতে করাতে একরকম স্বর্বশান্ত প্রায়। শেষে আসেন মালদা মেডিক্যালের বহির্বিভাগে। অর্থোপেডিক সার্জেন ডা: বাপ্পাদিত্য ঘোষের তত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয় মাস খানেক ধরে। তিনি জানান,‘রোগীর দু’পায়ের নি জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করা হল। যা মালাদ মেডিক্যালে প্রথম। এমনকী জেলায় এ ধরণের চিকিৎসা এর আগে হয় নি। এর জন্য প্রস্থেসিস কলকাতা থেকে আনতে হয়েছে। আপাতত ডান পায়ে করা হল। পরে বাঁ পায়েও করা হতে পারে। দু’দিন বাদেই রোগী ওয়াকার নিয়ে হাঁটতে পারবেন।’ তিনি আরও বলেন,‘এই ধরণের চিকিৎসা কলকাতায় কারালে আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হত। ব্যাঙ্গালুরুতে খরচটা আরও বেশি হয়। আমরা সেখানে একরকম বিনে পয়সায় করাতে পারলাম। রোগীর আর্থিক অবস্থা এমনিতে খারাপ। বাইরে গিয়ে চিকিৎসা করানো তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না।’ টানা আড়াই ঘন্টার অস্ত্রোপচারের পর সফলতা আসে বলে জানা গেছে। ডা: বাপ্পাদিত্য ঘোষের সঙ্গে সহযোগী হিসেবে ছিলেন ডা: হীমাদ্রিশেখর বালা ও ডা: অরিন্দম বাসু। মালদা মেডিক্যালের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন রোগীর স্বামী অতুল মন্ডল। তিনি বলেন,‘বাইরে অত টাকা দিয়ে চিকিৎসা করানো আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। ডাক্তারবাবুরা যা করলেন, সারা জীবন মনে রাখবো। উনারা সত্যিই ভগবান দূত।’
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct