ক্ষেপণাস্ত্র ক্লাব এমটিসিআর-এর সদস্য হওয়ার পর প্রথমবার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে ভারত। বৃহস্পতিবার ওড়িশার চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে মাঝারি পাল্লার এই ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্রের সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে। ভারত-ইসারায়েল যৌথ উদ্যোগে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রটি চলন্ত লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়। একটি চালকবিহীন বিমানের সাহায্যে আকাশে একটি লক্ষ্যবস্তুকে ওড়ানো হয়েছিল। সেই লক্ষ্যবস্তু বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে ধেয়ে আসছিল। রাডার থেকে সংকেত পেয়ে স্বয়ংক্রিয় মিসাইল সিস্টেম থেকে নিক্ষিপ্ত হয় ক্ষেপণাস্ত্রটি। মাঝ আকাশেই তা আঘাত হানে লক্ষ্যে। ভারতের ডিফেন্স রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ক্ষেপনাস্ত্রের পাশাপাশি পরীক্ষা করা পদ্ধতিটি বহুমুখী পর্যবেক্ষণ, গোয়েন্দা কাজে রাডারের হুমকির সংকেত, ক্ষেপনাস্ত্রের উপর নজরদারি ও পাহারায় ব্যবহৃত হবে। সফলভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানায় ডিআরডিও কর্মকর্তারা বেশ উচ্ছ্বসিত। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সব রকম মাপকাঠিতেই এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ছিল একটি অসামান্য সাফল্য। ডিআরডিও-র অধীনস্থ ইন্ডিয়ান ডিফেন্স রিচার্স ল্যাবরেটরিজ (ডিআরডিএল) এবং ইসরায়েলের সংস্থা ইসরায়েল অ্যারোস্পোস ইন্ডাস্ট্রিজ (আইএআই) যৌথ উদ্যোগে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, ভারত-ইসরায়েল যৌথ উদ্যোগে যা তৈরি করেছে, তা শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়, একটি স্বয়ংক্রিয় আকাশসীমা সুরক্ষা ব্যবস্থা। মিসাইল ব্যাটারি ছাড়াও এতে রয়েছে মাল্টি ফাংশনাল সারভিল্যান্স অ্যান্ড থ্রেট অ্যালার্ট রেডার বা এমএফ স্টার। ভারতের আকাশসীমায় কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি দেখলেই রাডার সংকেত পাঠাতে শুরু করে। সতর্কবার্তা জারি হয়। রাডার সংকেত অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে ক্ষেপমাস্ত্র ছুটে যায় আকাশপথে ধেয়ে আসা বিপদ রুখতে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, আকাশপথে হওয়া যে কোনও হামলাকে রুখতে সক্ষম এই ভূমি থেকে আকাশ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটি। ৫০ কিমি থেকে ৭০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানতে পারবে। বৃহস্পতিবার এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের আগে চাঁদিপুরের ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ সংলগ্ন এলাকায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। লঞ্চ প্যাডের আড়াই কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বসবাসকারী ৩৬৫২ জনকে এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। বালেশ্বর, ভদ্রক এবং কেন্দ্রাপড়া জেলার উপকূলে মাছ ধরতে যাওয়ায় সাময়িক নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: