ফেসবুকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মীয় উসকানিমূলক ছবি ও খবর ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে একাধিক ষড়যন্ত্রকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে। সময়-সুযোগ বুঝে কিছুদিন পরপর তারা ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য ছড়িয়ে গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনায় নেপথ্য মদদ-দাতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে কলকাঠি নাড়লেও হাজার হাজার নিরীহ মানুষ হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতায় ব্যাপক প্রাণহানি, ঘরবাড়ি-ধর্মীয় উপাসনালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার পর সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সতর্ক করে বেশকিছু পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার জন্য সুপারিশ করলেও এইসব কার্যক্রম কিছুদিন যেতে না যেতেই ঝিমিয়ে পড়ছে। যার সুযোগ নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী বিশেষ চক্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় হেটস্পিচ ছড়িয়ে নিজেদের ফায়দা লুটছে। অনেকের মতে, হেটস্পিচের সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা না থাকা, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতা, ফেসবুক ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সরকার কিংবা সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের যথাযথ উদ্যোগ না থাকা, উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে সংঘটিত অপ্রীতিকর ঘটনা সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের দুর্বলতা ও দায়িত্বহীনতা, সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র এবং এর নেপথ্য মদদদাতাদের চিহ্নিত করতে না পারা, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিটিআরসির জোরাল ভূমিকা না থাকা, গুজব শনাক্তকরণ সেলের নির্ধারিত কার্যক্রমে গতি না পাওয়া এবং সতর্কতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত না রাখা। মূলত এই সব কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। আইনজ্ঞরা বলছেন, হেটস্পিচের কোনো সংজ্ঞা এখনো আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে করা হয়নি। এছাড়া আইনেও এর সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। এ ধরনের অসহিষ্ণুতা মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়িয়ে তুলছে।