জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে কমিউনিস্ট শাসিত চিন সরকার ফরমান জারি করেছিল একটির বেশি দুটি সন্তান হলে তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। পারে অবশ্য সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে হয়। এবার তার রেশ এসে পড়ল বিজেপি শাসিত রাজ্য অসমে। এমনিতেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস সহ উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো দাবি তুলছিল, জনসংখ্যা কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে।যদিও তার নিশানা ছিল সংখ্যালঘুরা। তাদেরভিনগ ছিল, সংখ্যালঘুরা জন্মনিয়ন্ত্রণ না করলে অদূর ভবিষ্যতে দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে হিন্দুরা। এই নিয়ে তারা বাড়ে বাড়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। এমনকি অনেক নেতা সগর্বে বলেছিলেন, জনসংখ্যা বাড়াতে হিন্দুদের বেশি করে সন্তানের জন্ম দেওয়া দরকার। তা নিয়ে হিন্দু দম্পতিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এবার সত্যি সদর্থক পদক্ষেপ নিল অসমের বিজেপি সরকার। আসাম সরকার সাফ বলে দিয়েছে, দুটির বেশি সন্তান হলে আর মিলবে না কোনো সরকারি চাকরি! অসম সরকারের সিদ্ধান্ত, ২০২১ সালের পর কোনো দম্পতির ঘরে যদি দুইয়ের বেশি সন্তান জন্মগ্রহণ করে তাহলে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে না। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রিসভা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে অসম সরকার।
সরকারি চাকুরিজিবীদের নিশানা করে অসম সরকার আরো বলেছে, যারা এরই মধ্যে সরকারি চাকরি পেয়েছেন তাদেরও বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। চাকরি প্রাপ্তদের যাতে দুইটির বেশি সন্তান না হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। না হলে তারাও চাকরি নিয়ে সমস্যায় পড়ে যেতে পারেন। জনসংখ্যা বৃদ্ধি রুখতেই এই পদক্ষেপ।
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৩৪ কোটি। আর চিনের প্রায় ১৪১ কোটি জনসংখ্যার বসবাস। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, আগামী ২০২৭ সালের মধ্যে জনসংখ্যার দিকে দিয়ে চিনকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে ভারত। তাই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সবার আগে অসম দুই সন্তান নীতিতে হাঁটতে চলেছে। অবশ্য এখন পর্যন্ত অন্য কোনো রাজ্য দুই সন্তান নীতি কার্যকর করতে পারেনি। সোমবার সন্ধ্যায় অসম মন্ত্রিসভা এই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিয়ে সেই কঠিন পদক্ষেপ করে দেখল। এ নিয়ে বলা হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে ২০২১ সালের ১ জানুয়ারির পর যেসব পরিবারে দুইয়ের বেশি সন্তান থাকবে তারা সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct