সাধারণ মানুষকে অনেকবেশি ডিজিটাল-মুখি করার লক্ষ্যে দেশের তথ্যপ্রযুক্তির ভোল পাল্টে দিতে নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষকে ইন্টারনেট সুবিধা দিয়ে শুরু হওয়া উদ্যোগটি আদতে গ্রামীন প্রেক্ষাপটে তেমন সুবিধা এনে দিতে পারেনি। এই মুহূতে ভারতে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৬৩ কোটিরও বেশি। তবে ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে প্রতি ১০০ জনে কমপক্ষে একজন রয়েছেন, যিনি সত্যিকার অর্থে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না। সেই ব্যক্তির গ্রামাঞ্চলে বাস করার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ডিজিটাল ভারত নিয়ে খুশি হওয়ার বেশ কিছু কারণও রয়েছে। গ্রাহকসংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এ সংখ্যা আমেরিকা, ইংল্যান্ড, রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচিতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সরকারি প্রশাসন সংস্কার করলে বিভিন্ন পক্ষের জন্য হরেক রকম সুযোগ-সুবিধা জোগানো সম্ভব। এ ধরনের সংস্কারের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা, কার্যকারিতা ও স্বচ্ছতা বাড়ে। আমলাতান্ত্রিকতার জট কমে। যোগাযোগ ও সমন্বয়ের উন্নতি হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এর ফলে সর্বত্র ও সব সময় নাগরিক-কেন্দ্রিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর সরকারি পরিষেবার জোগান ও প্রাপ্তি নিশ্চিত করা যায়। তবে পুরো ব্যাপারটিই ক্রমাগত ডিজিটাল বিভেদের বাস্তবতায় আটকে আছে। টেলিকম রেগুলেটরি অথোরিটি অব ইন্ডিয়ার প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ইন্টারনেট ঘনত্ব ৪৮.৪। মোট জনসংখ্যার প্রতি ১০০ জন ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যার ভিত্তিতে এই ঘনত্ব নির্ধারণ করা হয়। দেশের ৬৬ শতাংশ জনগোষ্ঠী গ্রামে বাস করলেও গ্রামীণ ইন্টারনেটের ঘনত্ব মাত্র ২৫.৩। সে তুলনায় শহরাঞ্চলের ঘনত্ব ৯৭.৯, যা গ্রামের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর মানে ভারতের নাগরিকদের মধ্যে যাঁদের ইন্টারনেটে অ্যাকসেস রয়েছে, তাদের কমপক্ষে একজন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct