প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে রীতিমতো বক্স বাজিয়ে প্রচার চলছে - 'স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে আপনারা সহযোগিতা করুন, আপনাদের পাশে রাজ্য সরকার' ইত্যাদি ইত্যাদি। চারিদিকে ফলাও করে রয়েছে এইসবে বিজ্ঞাপনও। একটায় উদ্দেশ্য - ভালোভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। তবুও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাতে কর্তব্যরত চিকিৎসকের অবহেলায় রুগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। গত সাতদিনে কালনা এবং মন্তেশ্বর হাসপাতালে এরূপ ঘটনাও ঘটেছে। এরকমঅহরহ কমবেশি ঘটে। তবে বেশিরভাগ চিকিৎসক রুগীদের সুস্থ করতে তৎপর, এটাও ঘটনা। আবার রুগীদের প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর দুঃব্যবহারের অভিযোগও পাওয়া যায়।
অন্যদিকে মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভরা সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারবাবুদের কাছে দাপটের সাথে পৌঁছে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রাজ্য সরকার কম খরচে এবং বিনামূল্যে ঔষধ সহ বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করার ব্যবস্থা রেখেছে। তবুও মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভদের সরকারি হাসপাতালে অবাধ প্রবেশ নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ দেখাচ্ছেন।
মঙ্গলকোট থেকে আসা এক জেলা সাংবাদিক তার কিছু এ অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন গত মঙ্গলবার সকাল ৯ টা নাগাদ এই প্রতিবেদক তার ৯ বছরের পুত্র সন্তান কে নিয়ে পিজি হাসপাতালে নিউরোলজি বিভাগে গিয়েছিলেন চিকিৎসার( ঘাড়ে শিরার ব্যথা) জন্য। প্রায় চারঘন্টা নুতন টিকিট কাটার লাইনে দাঁড়িয়ে নিউরোলজি বিভাগের ১ নং ঘরে গেলে এক চিকিৎসকের দুঃববহারের শিকার হন বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি জানান,তিনি দেখলেন প্রতি ঘরে দুজন ডাক্তারবাবু দুজন রুগী দেখছেন। দুজন রুগী বেরিয়ে যাওয়ার পর ঢুকতেই একজন মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ বাবুর আবির্ভাব ঘটলো। উনি ঔষধ কোম্পানির নানার কালার হ্যান্ডবিল ডাক্তারবাবু কে দিলেন। 'স্যার' সম্বোধনে ফিসফাস করে কিসব বলছেন। ডাক্তারবাবু শুধু মুচকি হেসে ঘাড় নাড়ছেন। আমি তখন অন্য ডাক্তারবাবু কে নুতন টিকিটটি দিলাম পুত্র কে দেখবার জন্য। ডাক্তারবাবু রেগে বললেন - "তু এখানে দাঁড়িয়ে কেন, ওইখানে( মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভের সাথে ব্যস্ত ডাক্তারবাবু) যা "। আমি বললাম - "আমি কি আপনার পূর্ব পরিচিত? যে তুই সম্বোধন করছেন"। ডাক্তারবাবু বললেন - "কেন কি হয়েছে, তোরা না....." উপলব্ধি হল - রোগীদের কেমন দুঃব্যবহারের শিকার হতে হয়। বিষয়টি সাথেসাথেই রাজ্যের শাসকদলের বিধায়ক তথা মেডিকেল কাউন্সিলের পদাধিকারী ডা. নির্মল মাজিকে ফোনে জানান ওই ভুক্তভোগী। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানালেও অসন্তোষ রয়েই গেছে। যদিও অভিযুক্ত ডাক্তারের কোনও মতামত পাওয়া যায়নি।