এনআরসি বা জাতীয় নাগরিকপঞ্জী অসমের বসবাসকারী ১৯ লক্ষ মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। দুশ্চিন্তা দুর্বিসহ জীবন কাটাতে হচ্ছে বহু মানুষদের। এই তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বহু হিন্দু মহিলা। তাদের মধ্যে একজন হলেন শিলচর কাঠিগড়া নিবাসী মালতীবালা দাস। মালতির দুটো কিডনি বিকল। তার উপর এসেছে ডি বা ডাউটফুল ভোটারের নোটিশ। অর্থাৎ সন্দেহজনক ভোটার তকমা লাগিয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে তাকে। একদিকে চিকিৎসা করতে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। অন্যদিকে ট্রাইব্যুনাল কোর্টে ছুটতে হচ্ছে। পরপর তিনটি নোটিশ প্রেরণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুর থেকেও চরম যন্ত্রণা মালতী দাসের। বেঁচে থাকলে প্রমাণ করতে হবে তিনি বিদেশি নন। তা না হলে ডিটেনশন ক্যাম্প হয়ে উঠবে তার ঠিকানা। এই চিন্তায় দিন গুনছেন তিনি। ১৯৬৪ সালের অসম সরকারের দেওয়া রিফিউজি সার্টিফিকেট জমা করেছিল তার বাবার নাগারিকপঞ্জিতে নাম।তোলার জন্য। কিন্তু তা গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে নাম উঠেনি নাগরিকপঞ্জিতে। ১৯৭৭ থেকে লাগাতার ভোটারলিস্টে নাম আছে এবং ভোট দিয়ে যাচ্ছেন।
তাঁর আইনজীবি কাজল চান্দা জানিয়েছেন, সরকারি ট্রাইব্যুনাল কোর্টে কর্মচারীর অকাল। কোনো পরিকাঠামো নেই। ফলে বিচারপ্ৰক্রিয়া ঠিকভাবে হয়নি। তিনি বলেন মালততীর পক্ষে উচ্চ আদালতে আবেদন করব।
এ ব্যাপারে শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা বলেন, এনআরসি নিয়ে খুবই এক কঠিন পরিস্থিতি দেখা দেবে। যাদের নাম চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে হাতে সময় ১২০ দিন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল কোর্টের পরিকাঠামো খুবই দুর্বল। আগে থেকে বহু মামলা ঝুলে আছে ট্রাইব্যুনালে। এরপর এই কম সময়তে চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষ মানুষদের নাম এবং আবেদনের প্ৰক্রিয়ার শুনানি কি সহজ হবে তা নিয়ে চরম সংশয় রয়েছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct