দরিদ্র এক হিন্দু পরিবারের কনে ঝুমা শীলের বিয়ের দিন তারিখ আগে থেকে ঠিক থাকলেও অর্থের অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েন অসহায় পিতা কানু শীল ও মাতা লক্ষ্মী শীল। দিনমজুরের মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হণ্যে হয়ে ঘুরছিল মেয়েটির পরিবার। কনে ঝুমার বিয়ের জন্য যখন প্রবল আর্থিক সংকটে পরিবার, ঠিক তখনই এই বিয়েতে আর্থিক সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও সাংবাদিক সমাজ। বিয়ের সোনা, কাপড়, আসবাবপত্রসহ হিন্দু ধর্মীয় বিয়ের রীতিনীতিতে নেচে-গেয়ে জাঁকজমক আচার-অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জমকালো অনুষ্ঠান করে আখাউড়ায় হিন্দু কনের বিয়ে দিয়ে এ যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির স্থাপন করলো স্থানীয় মুসলিমরা। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের রাধানগর গ্রামে। দীর্ঘ দিন ধরে হিন্দু আর মুসলমানদের একত্রিত বসবাস। পূজা-অর্চনা কিংবা বিয়ে উভয় ধর্মের পারিবারিক যে কোনো অনুষ্ঠানে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই উপস্থিত হয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়া আখাউড়ার পুরনো রেওয়াজ। কনের বাবা রাধানগরের ভাড়া করা বিয়ে বাড়িতে গোধূলির শেষ লগ্নে যখন রাত গড়ায় তখন বরবরণ শুরু হয়। বিয়ে অনুষ্ঠানে সাতপাক, শুভদৃষ্টি, মালাবদল, সম্প্রদান ও অঞ্জলির মধ্যদিয়ে বিয়ের মূলপর্ব শেষ হয়। পরে বর-কনে দু’জনের দিকে শুভ দৃষ্টি আর একই সময় মালা বদল করা হয়। এ সময় পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে বর-কনের ডান হাত একত্রে করে কুশ দিয়ে বেঁধে দেন। বরকে সামাজিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বিদায় দেওয়া হয়। বিদায়লগ্নে কানু শীল ও লক্ষ্মী শীল তাদের দু'চোখ ভরে গিয়েছে আনন্দের অশ্রুজলে। কন্যাকে সামাজিকভাবে পাত্রস্থ করতে পেরে অনেক খুশি বলে কেঁদে ফেলেন তারা। কৃতজ্ঞাতা জ্ঞাপন করেন ওসি রসুল আহম্মদ নিজামী, আখাউড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মহিউদ্দিন মিশু, আখাউড়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী ভূঁইয়া ও পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু কাউছারের কাছে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct