ভারত থেকে কেন রোহিঙ্গা উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে সুপ্রিম.কোর্ট৷ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ভারত রোহিঙ্গা বিতাড়ন বন্ধে আইনি পথ অনুসরণের ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে বিতাড়ন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি হয়নি কেন্দ্র৷। ১১ সেপ্টেম্বর এ নিয়ে ফের শুনানি হবে৷
কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি 'অবৈধভাবে' বসবাসরত ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে দেশ থেকে বের করে মায়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আদালতে দু’জন রোহিঙ্গা অভিবাসীর পক্ষ থেকে দায়ের করা পিটিশনে বলা হয়েছে, মায়ানমারে তারা মামলার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং তাদের সেখানে ফেরত পাঠানো হলে তা আন্তর্জাতিক চুক্তির লঙ্ঘন হবে। সুপ্রিম কোর্টে রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন কর্মসূচির বিরুদ্ধে আবেদনে তাদের বিরুদ্ধে ‘দমনপীড়নমূলক পদক্ষেপ’ না নেয়ার দাবিও জানান তারা। তবে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এক শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এমন কোনো আশ্বাস দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংসদে রোহিঙ্গাসহ বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বের করে দিতে সব রাজ্যকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান। এরপরই রোহিঙ্গাদের মধ্যে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি হলে তারা বিতাড়ন বন্ধের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
আদালতে রোহিঙ্গাদের আবেদনে বলা হয়, তাদের বের করে দেয়ার যে কোনো উদ্যোগ সাংবিধানিক নিশ্চয়তার পরিপন্থি হবে। তাছাড়া, যে দেশে পাঠানো হলে উদ্বাস্তুদের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা আছে, সেখানে তাদের পাঠানো থেকে বিরত রাখার আন্তর্জাতিক আইন রয়েছে। ভারত সেই আইনের শরিক হওয়ার সুবাদে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের চেষ্টা করলে সেই আইন লঙ্ঘিত হবে।
সোমবার রোহিঙ্গা আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ আদালতে বলেন, ‘রোহিঙ্গারা দুনিয়ার সবচেয়ে দুর্ভাগা মানুষ। সর্বত্র ওদের হত্যাকরা হচ্ছে। ওদের রক্ষা করুন।’ কিন্তু প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এ ব্যাপারে কোনো অভয় দেয়নি। এদিন, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে তাদের পিটিশনের কপি কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে বলে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ওই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct