হাতে কিংবা পায়ে 'ঝি ঝি ধরা' বিষয়টি আমরা সবাই জানি। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি।
শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসাথে ঐ অংশে খোঁচা দেওয়া হচ্ছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে। বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে 'সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস' বা 'লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস' এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে 'পেরিফেরাল আর্টারাল ডিজিজ' হিসেবে ঝি ঝি ধরতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে শরীরের ঐ অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ঝি ঝি ধরে থাকে।ডায়বেটিসের কারণে ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার কারণে হাত পায়ে ঝি ঝি ধরে। আমাদের দেহের সবখানেই অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ঐ অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ঐ অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝি ঝি ধরতে পারে। স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ঐ অংশ থেকে যেসব তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর কথা ছিল, তা বাধাগ্রস্থ হয়। একইসাথে স্নায়ুগুলোও হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পাওয়া থেকে বিরত থাকে যেহেতু রক্ত সরবরাহকারী শিরার ওপর চাপ পড়ে।ঝি ঝি ধরলে সাময়িকভাবে অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গটি টানটান করে রাখলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যে দ্রুত ঐ অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct