বাংলাদেশের বগুড়ার সান্তাহার থেকে ৩ কিলোমিটার ভেতরে তারাপুর নামের একটি গ্রাম। দক্ষিণ পাড়ায় এখনও কালের সাক্ষী হয়ে আছে একটি মসজিদ। যে মসজিদের ওপরে মাত্র একটি গম্বুজ। আছে ছোট আকৃতির একটি দরজা। ভিতরে মাত্র তিনজন মানুষের নামাজ পড়ার জায়গা। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এর চেয়ে ছোট মসজিদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা যায়নি। তাই অনেকের মতে, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে ছোট মসজিদ। লম্বায় এই মসজিদের উচ্চতা ১৫ ফুট আর প্রস্থ ৮ ফুট, দৈর্ঘ্য ৮ ফুট। এর দরজার উচ্চতা ৪ ফুট আর চওড়া দেড় ফুট। একজন মানুষ অনায়াসে সেখানে ঢুকতে বা বের হতে পারেন। একটি গুম্বুজ আছে, যেটা অনেকটাই উঁচুতে। ‘নামহীন’ এই মসজিদটির দেওয়ালের পুরুত্ব দেড় ফুট। তবে যে ইটগুলো মসজিদের দেওয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো অর্ধেক ভাঙা। এছাড়া মসজিদের দরজায় দুটি রাজকীয় নিদের্শনার আদলে নির্মিত খিলান রয়েছে। এই মসজিদ নির্মাণ নিয়ে বেশ কয়েকটি মত প্রচলিত রয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘটনা সবচেয়ে প্রচলিত। জানা যায়, সান্তাহারের ছাতিয়ানে ছিল রানি ভবানীর বাবার বাড়ি। আর সান্তাহারের আশেপাশেসহ তারাপুরও রানি ভবানীর বাবার রাজত্ব ছিল। তারই অংশ হিসেবে রানি ভবানীর আসা-যাওয়া ছিল এই গ্রামে। অনেকের মতে, হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হওয়ার কারণে ওই মহিলার নামাজ পড়ায় অনেক অসুবিধা হতো। রানি ভবানী এমন কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই এই গ্রামে চলে আসেন আর সেই মহিলাকে যেন কেউ তার নামাজে অসুবিধা না করতে পারে সেজন্য পেয়াদাদের হুকুম দেন রাজকীয় নকশায় একটি মসজিদ তৈরি করে দেওয়ার। এলাকাবাসীরা জানায়, প্রায় দেড়শ’ বছর আগে এখানে নামাজ পড়া হতো। কে বা কারা, কেন এই মসজিদ নির্মাণ করেছেন তা আজও জানা যায়নি।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct