ব্রিস্টলে ১৭ বছর বয়সী এক যুবকের প্রায় অন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে চক্ষু ছানাবড়া বিশেষজ্ঞদের। জানা গিয়েছে, দৃষ্টিশক্তির ক্ষতির কারণ হিসেবে অতিরিক্ত চিপস ও ভাজাপোড়া–জাতীয় খাবারের নাম উঠে এসেছে। প্রায় অন্ধ হয়ে যাওয়া ছেলেটির নাম স্যাম। ব্রিস্টলের চক্ষু চিকিৎসকেরা স্যামের হঠাৎ করে দৃষ্টিহীন হয়ে যাওয়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে ছেলেটি কেবল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, চিপস আর সাদা পাউরুটি খেত। মাঝেমধ্যে এক টুকরো মাংস বা সসেজ ছিল তার খাদ্যতালিকার অংশ। বাইরে থেকে দেখে মনে হতো, তার শরীর ঠিকই আছে। খুব রোগাও না, আবার খুব মোটাও না—এমন ছিমছাম স্বাস্থ্যের অধিকারী এক কিশোরকে দেখে কে বলবে, তার দেহে বাসা বেঁধেছে কঠিন সব অসুখ? পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যায়, স্যামের শরীরে ভিটামিনের প্রচুর ঘাটতি রয়েছে। অপুষ্টির কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই স্যাম খুব ক্লান্তিবোধ করত। কিছুই ভালো লাগত না তার। সে সময় ভিটামিন বি১২–এর অভাব শনাক্ত করে তাকে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও ডায়েট তালিকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বেশি দিন সে ডায়েট মেনে চলতে পারেনি স্যাম। খুব শিগগিরই আবারও নিজেকে সে সঁপে দেয় চিপস আর ভাজাপোড়ার কাছে। এ ঘটনার তিন বছর পর ক্রমে দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের কারণে তাকে ব্রিস্টল চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক ডানাইজ আতান বলেন, স্যামের খাবার প্রতিদিন স্থানীয় দোকান থেকে এক প্যাকেট করে ভাজা মাছ বা চিপসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তার খাদ্যতালিকায় কোনো ধরনের ফল বা শাকসবজি ছিল না। তাঁর সহকর্মীরা স্যামের ভিটামিন লেভেল পরীক্ষা করে দেখেন, স্যামের দেহে কপার, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডিসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ দ্রব্যের ঘাটতি আছে। স্যামের ওজন বেশি বা কম ছিল না, তবে মারাত্মকভাবে অপুষ্টিতে ভুগছিল সে। তার হাড়ে খনিজের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছিল। স্যামের বয়সী একটি ছেলের এমন শারীরিক ক্ষতি কল্পনা করতেও কষ্ট হচ্ছিল চিকিৎসকদের। দৃষ্টিশক্তি কমতে কমতে এখন প্রায় অন্ধ হয়ে গিয়েছে স্যাম।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct