কারগিল যুদ্ধে অংশ নেওয়া এবং রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সুবেদার মুহাম্মদ সানাউল্লাহকে নিয়ে কম হইচই হয়নি। তার নাম এনআরসির খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাওয়ায় স্থান হয়েছিল ডিটেনশন ক্যাম্পে। পারে হাইকোর্টের রায়ে রেহাই পেলেও অসমের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জিতে বাদ গেল তার নাম । এ বিষয়ে ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত জুনিয়র কমিশনড অফিসার (জেসিও) সমের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় স্থান পাননি। শুধু তিনি নন তাঁর তিন সন্তান, দুই মেয়ে ও এক ছেলের নাম তালিকায় নেই। কিন্তু চূড়ান্ত তালিকায় স্ত্রীর নাম রয়েছে।
উল্লেখ্য, মুহাম্মদ সানাউল্লাহকে কামরুপের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৮ সালে সন্দেহজনক ভোটার হিসেবে তার নাম তালিকাভূক্তির পর ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে তার নামে মামলা হয়। এরপর মে মাসে তাকে বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। পরে গুয়াহাটি হাই কোর্ট থেকে তিনি জামিন পান। তবে হাই কোর্ট ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় খারিজ করে দেয়নি। আদালত জানায়, তার আবেদনের শুনানি চলবে।
সানাউল্লাহ ও তার সন্তানদের বিরুদ্ধে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায় গুয়াহাটি হাই কোর্টে বিচারাধীন থাকায় চূড়ান্ত নাগরিক তালিকায় তাদের নাম অন্তর্ভুক্তির কোনও সুযোগ ছিল না। এনআরসির ধারা অনুসারে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত কোনও বিদেশি ও তার সন্তানরা চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পাবেন না।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার চাকরিতে যোগ দেন ১৯৮৭ সালে। আসাম সরকারের কর্মকর্তা চন্দ্রমাল দাস সানাউল্লাহকে বিদেশি আখ্যায়িত করে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২০০৮ সালে তাকে নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে তিনি ট্রাইব্যুনালে হাজির হন এবং ২৩ মে তাকে বিদেশি ঘোষণা করে গোয়ালপাড়ার একটি বন্দিশিবিরে পাঠানো হয়। তবে শনিবার অসমের যে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশ করা হয়েছেসেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রায় ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। এক বিবৃতিতে এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চূড়ান্ত তালিকায় মোট আবেদনকারী ৩ কোটি ৩০ লাখ ১৭ হাজার ৬৬১ জনের মধ্যে নাগরিক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জন। তালিকায় স্থান না পাওয়া ব্যক্তিরা ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিল করার সুযোগ পাবেন।