অসমের নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি হওয়ার পর প্রায় ৪০ লাখ বাঙালির নাম বাদ গিয়েছিল। এদের মধ্যে সিংহভাগ মুসলিম হলেও হিন্দুদের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। ইতিমধ্যে নাগরিকপঞ্জি থেকে নাম বাদ যাওয়ায় বহু মানুষ আত্মহত্যা করেছে। তাদের মধ্যে যেমন মুসলিমরা আছেন তেমনি আছেন হিন্দুরাও। জানা গেছে এ পর্যন্ত অসমের নাগরিকপঞ্জির জন্য ৪০ হিন্দু মারা গেছেন বলে অসম ও কলকাতার একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি কলকাতা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন। নাগরিকপঞ্জী নিয়ে এক আলোচনা সভায় প্রেমতোষ দত্তচৌধুরীর লেখা 'আমার দেশের মাটি' বই আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করা হয়। ওই বইটিতে এনআরসির ভয়াবহতা তুলে ধরা হয়েছে। লেখক সেই ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেন। ধর্ম ভুলে সমগ্র বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দেন। অসমে বাঙালি আন্দোলনের অন্যতম মুখ বিশিষ্ট অধ্যাপক মানবাধিকার কর্মী অধ্যাপক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস, পার্থসারথী বসু বলেন,
নাগরিক পঞ্জী ঘিরে ততাদের আশঙ্কার কথা জানান। বাংলা পক্ষ সংগঠনের সভাপতি গর্গ চ্যাটার্জি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও অসম সরকার ঐক্যবদ্ধ ভাবে অসম থেকে বাঙালিদের তাড়ানোর চক্রান্ত করছে। বাঙালিদের বন্দি করতে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির জন্য ৬৫ কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ এ পর্যন্ত ৫৬ জন বিভিন্ন ভাবে মারা গেছে এনআরসির জন্য। তার মধ্যে ৪০ জনের বেশি হিন্দু বাঙালি বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, এখন রাজনীতির জন্য মুসলিমদের কথা সেভাবে তুলে ধরা যাচ্ছে না, মুসলিমদের দুঃখ কষ্ট নিয়ে বলা নাকি এখন অপরাধের শামিল। তারা হাজার কষ্ট পেলেও বলা যাবে না! কিন্তু এত হিন্দুকে কেন দেশহীন করার চক্রান্ত তা নিয়ে জিজ্ঞাস্য। যে বাঙালি স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিল তাদের কেন বারবার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে, তা নিয়ে প্ৰশ্ন তোলেন গর্গ বাবু।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct