এলটিটিই জঙ্গি হামলা প্রথমে এদেশে শোরগোল ফেলে নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে কংগ্রেসের প্রচার সভায় গিয়ে আত্মঘাতী হামলায় প্রাণ গিয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর। ওই আত্মঘাতী হামলায় মূল চক্রী হিসেবে উঠে আসে দক্ষিণী কন্যা নলিনীর নাম। তার সাজাও হয়। অবশেষে ২৭ বছর পর প্যারোলে মুক্তি পেলেন রাজীব গান্ধী হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরণ। মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে গত শুক্রবার এক মাসের জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তি দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্টে।
মেয়ের বিয়ের জন্য তামিলনাড়ু সরকারের কাছে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেছিলেন নলিনী। আবেদনে বলেছিলেন গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তার মেয়ের বিয়ে তাই প্যারলে ছেড়ে দেওয়া হোক। কিন্তু, তার আবেদন খারিজ হয়ে যায়।পরে মার্চে একই আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি প্রশাসন।
বাধ্য হয়ে এপ্রিল মাসে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন নলিনী। মেয়ের বিয়ের প্রস্তুতির জন্য ৬ মাসের জন্য মুক্তি চেয়েছিল। এর ভিত্তিতে গত ২৫ জুন শুনানি হয় আদালতে। তারপরই ৫ জুলাই নলিনীকে আদালতে সশরীরে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। শুক্রবার সেই নির্দেশ মেনে মাদ্রাজ হাই কোর্টে হাজির হন নলিনী। উভয়পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর নলিনীকে ৬ মাসের জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। তার বদলে ৩০ দিনের জন্য তাকে প্যারোলে মুক্তির আদেশ দেয়া হয়। শুক্রবার এই মামলার শুনানির পর নলিনীর মুক্তির জন্য তামিলনাড়ু সরকারকে ১০ দিনের সময় দিয়েছেন দুই বিচারপতি। পাশাপাশি নলিনীকে কোনও সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়া বা কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করা যাবে না।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ২১ মে তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে কংগ্রেস প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন রাজীব গান্ধী। সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গি সংগঠন লিবারেশন টাইগারস অফ তামিল ইলম (এলটিটিই)। তাতেই মৃত্যু হয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিল মুরুগান, সান্থান, পেরারিভালান, জয়াকুমার, রবিচন্দ্রন, রবার্ট পায়াস ও নলিনী। প্রথমে এদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও পরে সাজা কমিয়ে যাবজ্জবীন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct