পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলের প্রচেষ্টা প্রথম শুরু হয় বামফ্রন্টের আমলে। ২০১১ সালে বাম ফ্রন্ট সরকার প্রথম এই বিষয়ে একটি প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠায়। দিল্লিতে বিভিন্ন সরকারি মিটিংয়ে রাজ্যের নামের ইংরেজি অক্ষরের কারণে সবার শেষে ডাক পেত। ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী ‘ডব্লিউ’ একেবারে শেষ দিকে হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ সবার শেষে উল্লেখিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রাজ্যের কথা গুরুত্ব পেত না। তাই নাম থেকে ‘পশ্চিম’ বাদ দিলে ইংরেজি বর্ণমালা অনুযায়ী ‘বি’ প্রথম দিকে থাকবে। এ ছাড়াও অন্য এক যুক্তি হলো, ‘পূর্ব বাংলা’র অস্তিত্ব যখন নেই, ‘পশ্চিম’ নাম রাখার তা হলে যৌক্তিকতা কোথায়? প্রায় একই যুক্তিতে ২০১৬ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারও নাম বদলের প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পাঠায়। রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাবটি রাজ্য বিধানসভায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীতও হয়। তা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলানো যাবে না বলেকেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল।
বুধবার ভারতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে এই কথা জানান। তিনি জানান, রাজ্যের নাম বদলাতে হলে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন।
প্রশ্নটি করেছিলেন সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানতে চেয়েছিলেন, রাজ্য সরকার পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ রাখার যে প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পেশ করেছিল তার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে কিনা।
জানানো হয়‘পশ্চিমবঙ্গ’ পাল্টে ‘বাংলা’ করার ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আপত্তি রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাকি অভিমত পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে ‘বাংলা’ করা হলে বাংলাদেশের সঙ্গে নামের মিল এসে পড়বে। সেক্ষেত্রে বাংলা আর বাংলাদেশের তফাৎ বোঝা যাবে না। আবার আরএসএস ও সংঘ পরিবার এ রাজ্যে থেকে নাকি অভিযোগ তুলেছে, বাংলা নাম চালু করার পিছনে মমতার অভিসন্ধি রয়েছে। তারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে যেতে চাই কিনা সন্দেহ গেরুয়া শিবিরের। তবে মমতা সরকারে বক্তব্য বাংলা নাম থাকলে বাংলা সংস্কৃতি শুধু নয় বাঙালির ঐতিহ্যও বজায় থাকত বেশি করে। এত বাংলার বিরুদ্ধে চক্রান্ত। সবাই বাংলা বলতে পশ্চিমবঙ্গকে বোঝায়। তাই প্রচলিত কথা থাকলে বাংলার গৌরব বৃদ্ধি পেত। যদিও বাংলা নামে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে গেরুয়া শিবির!
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct