প্রচণ্ড পেট ব্যথা নিয়ে এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভতি হয়েছিলেন। নার্স এ বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব না দিয়ে স্থূলতাজনিত সমস্যা ভেবে তাকে উচ্চ রক্তপাতের ওষুধ দিয়ে ব্যথা দমন করে দিলেন। পরবতী সময় জানা যায় সেই ব্যাক্তিটি গর্ভবতী ছিলেন। ওই লোকটি ছিলেন একজন ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামী পুরুষ। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনের একটি নিবন্ধে ঘটনাটি এই তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে জানা গিয়েছে, কিছু ওষুধ সেবনের কারণে এ ধরনের বিপদ ঘটতে পারে। যেমন, কোষজনিত সমস্যা ও সিস্টিক ফাইব্রোসিসের মতো রোগ নির্ণয়ে ভুল ওষুধ প্রয়োগের কারণে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের প্রধান গবেষক ডক্টর ডাফনা স্ট্রোউমসা জানান, ওই ব্যক্তির সাথে কী ঘটেছে সেটা কোনো মুখ্য বিষয় নয়। এটা হলো-ট্রান্সজেন্ডার লোকদের ওপর স্বাস্থ্যজনিত ব্যবস্থার ভুল প্রয়োগের একটি উদাহরণ। তিনি বলেন, মেডিক্যাল রেকর্ডে \'তাকে সঠিকভাবে পুরুষ হিসেবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে\' এবং আপাতদৃষ্টিতে তাকে পুরুষজাতেরই মনে হয়েছে। কিন্তু তার চিকিৎসার প্রয়োজনে পুরুষ হিসেবে শ্রেণীভুক্তকরণ ঠিক ছিল না। জানা গিয়েছে, রোগীটির বয়স ছিল ৩২ বছর। তিনি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে গিয়ে নার্সকে জানান, তিনি একজন ট্রান্সজেন্ডার। তবে ইলেকট্রনিক মেডিকেল রেকর্ডে তাকে একজন পুরুষ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বহু বছর ধরে তার কোনো \'পিরিয়ড\' ছিল না এবং তিনি টেস্টোস্টেরন গ্রহণ করেছিলেন। টেস্টোস্টেরন এমন এ ধরনের হরমোন যা \'মাসকুলাইনিং\' (পুং-লিঙ্গ) প্রভাব ফেলেছে। ওই হরমোনের কারণে ডিম্বাশয় গঠন ও মাসিক (মিনেষ্ট্রেশন) কমে যেতে পারে। কিন্তু তিনি এক পর্যায়ে হরমোন ও রক্তচাপের ওষুধ গ্রহণ করা বন্ধ করে দেন।ওই লোক বাড়িতে প্রেগনেন্সি টেস্ট (গর্ভাবস্থা পরীক্ষা) করেছিলেন যা \'পজিটিভ\' ছিল। একজন নার্স তাকে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাতে বলেছিলেন। এই নার্সটি তার অবস্থাকে স্থিতিশীল এবং এ সমস্যাকে জরুরী নয় বলে বিবেচনা করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরে একজন ডাক্তার বিষয়টি আমলে নিয়ে হাসপাতালে পরীক্ষা করেন। এই টেস্টের মাধ্যমে তার প্রেগনেন্সি (গর্ভাবস্থা) নিশ্চিত করা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct