‘বাবা আমার কি বিয়ে হবে না?’, নিজেদের গ্রামের কারোর বিয়ে দেখলেই এই প্রশ্নটা বাবাকে প্রায়ই করত অজয়। প্রতি বারই বাবা তাকে সান্ত্বনা দিত খুব শিগগিরই তার বিয়ে দেওয়া হবে। ধুমধাম করে বিয়ে হবে, ফুটফুটে বউ আনা হবে। ছেলেকে এমন সব ‘অলীক স্বপ্ন’ দেখাতেন বাবা।আর সেই আনন্দে গুজরাটের হিম্মতনগরের বাসিন্দা অজয় তার গ্রামের কারোর বিয়ে হলেই পৌঁছে যান। নিমন্ত্রণের ধার ধারেন না। সেখানে গিয়ে কনে বা বর পক্ষের হয়েই উদ্দম নেচে আসেন। অজয়ের বাবা বিষ্ণু বারোত জানতেন, ছেলের কোনোদিন বিয়ে হবে না। কারণ, ছেলে বিরল রোগে আক্রান্ত। ছেলের বিয়ে দিয়ে আরও একটি মানুষের জীবন নষ্ট করতে চান না তিনি। তার বাবা জানান, লার্নিং ডিসএবিলিটির শিকার। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো তার আচরণ নয়। ২৭ বছর বয়সী অজয়ের সেই স্বপ্ন পূরণ হল এদিন।একেবারে বিয়ের সাজ! সোনালি শেরওয়ানি, মাথায় পাগড়ি, গলায় গোলাপের মালা- পুরোদস্তুর বর সেজে ঘোড়ায় চড়ে চললেন বিয়ে করতে। আয়োজনের কোনও খামতি নেই। গান-বজনা সবই ছিল। কিন্তু কনে কোথায়? উৎসূক অতিথিদের একটাই প্রশ্ন। আসলে কনে ছাড়াই বিয়ে হল অজয়ের। গুজরাটি আচার-অনুষ্ঠান মেনেই তার বিয়ে হয়। বিয়ের এক দিন আগে সংগীত ও মেহেন্দি অনুষ্ঠানও হয়। কমপক্ষে ৮০০ অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন। অজয়ের বাবা বিষ্ণু বারোত বলেন, 'বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল ছেলের। তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি এতেই আমরা খুশি। ওর জন্য মেয়ের জোগাড় করতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানে কোনও ত্রুটি রাখিনি।'
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct