কম-বেশি অনেকেরই ঘাড়, পিঠ বা কোমর ব্যথার অভিজ্ঞতা রয়েছে । মেরুদন্ড, ঘাড়, পিঠ ও কোমরের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ । বিষেশত বয়ষ্কা মহিলারা বেশি কষ্ট পায়। আঘাতহীন ব্যথার জন্য মেরুদন্ডে হালকা ব্যথা হলেও পরবর্তী সময়ে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় শরীরের অন্য অংশে। তাই মেরুদন্ডের ব্যথায় সবার আগে প্রয়োজন রোগ নির্ণয় ও সঠিক-কার্যকর চিকিৎসা। তা না হলে রোগীর যন্ত্রনা বাড়তে থাকে ।
মেরুদন্ডের গঠন: গঠন অনুযায়ী মাথার খুলি থেকে প্রথম সাতটি হাড় বা কশেরুকা নিয়ে ঘাড়, পরবর্তী ১২টি হাড় নিয়ে পিঠ, তার নিচে পাচটি হাড় নিয়ে কোমর গঠিত। নানা কারণে মেরুদন্ডে ব্যথা হয়ে থাকে । ব্যথার উৎপত্তিস্থল ও লক্ষন প্রকাশের ভেতর দিয়ে মাথার খুলি থেকে নেমে আসা নার্ভ বা স্পাইনাল কর্ডে দুই হাড়ের মধ্যবর্তী ডিস্কের কিছু অংশ বের হয়ে গিয়ে চাপের সৃষ্টি করলে ব্যথা হয়। প্রচলিত ভায়ায় এ জাতীয় ব্যথাকে মেরুদন্ড হাড়ের ক্ষয়, হাড়ের ফাক হয়ে যাওয়া বা হাড়ের বৃদ্ধি বলা হয়ে থাকে।
প্রকৃত পক্ষে চিকিৎসাশাস্ত্রে এ জটিলতাকে ডিস্ক প্রোল্যাপ্স, হার্নিয়েটেড ডিস্ক, স্পাইনাল স্টেনোসিস বলা হয়। ডিস্কের স্থানচ্যুতি বা সরে যাওয়ার মাত্রার ওপর নির্ভর করে প্রোল্যাপ্স রোগের জটিলতা।
মেরুদন্ডের সমস্যার লক্ষন :
দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় ঘাড়ে ব্যথা অনুভ’ত হওয়া, ব্যথা ঘাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে হাতের দিকে ছড়িয়ে যায়। পর্যায়ক্রমে কাঁধে ও হাতে ব্যথা ও হাতের বিভিন্ন অংশে ঝিন ঝিন, শিন শিন করা। হাতের বোধশক্তি কমে আসা, পর্যায়ক্রমে হাতের অসারতা ও ধীরে ধীরে হাত দুর্বল হয়ে কার্যক্ষমতা লোপ পাই, চুড়ান্ত পর্যায়ে পঙ্গুত্বের দিকে ধাবিত হয়। চলার ও হাটার স্বাভাবিক ভঙ্গির পরিবর্তন হয়ে যায়।
কোমর ব্যথার লক্ষন:
দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমরে ব্যথা অনুভূত হওয়া, ব্যথা কোমর থেকে আরাম্ভ হয়ে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিতম্ব ও পায়ের মাংসোপেশিসহ ব্যথা অনুভূত হয়, পায়ের বিভিন্ন অংশে ঝিন ঝিন, শিন শিন করা,পায়ের বোধশক্তি কমে আসা ও পর্যায়ক্রমে পা দুর্বল হয়ে পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পায়।
পরামর্শ: ব্যথার নিরাময়ের জন্য রোগীরা সাধারনত ব্যথানাশক ঔষধের ওপর নির্ভর করে ব্যথা উপশমরে চেষ্টা কর। নিয়মিত ব্যথানাশক খাওয়ার ফলে কিডনি বিকল হয়ে যাওয়ার ঝুকি বেড়ে যায়। তাই ঘাড় পিঠ বা কোমর ব্যথায় অবহেলা না করে দ্রæত চিকিৎসকের কাছে শরনাপন্ন হওয়া উচিত। ব্যথা বাড়তে থাকলে প্রচলিত অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
চিকিৎসা:হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা লক্ষণ ভিত্তিক। রোগীর ভাল-মন্দ অবয়ব, সর্বদৈহিক, শারীরিক ও মানসিক কাতরতাসহ যাবতীয় দিক বিবেচনা করে চিকিৎসা করা হয়। হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে কাটা ছেড়া-রক্তপাতহীন উপায়ে কোমর ও হাড় ক্ষয়ের ব্যথা আরোগ্য করা সম্ভব। তাই এখানে মেডিসিনের নাম উল্লেখ করা হলো না।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct