গরমের শুরুতে সাধারণত শরীরে চিকেন পক্স হতে দেখা যায়। আগে এই রোগে অনেক মানুষ মারা যেতেন। ছোঁয়াচে এ রোগ সারা বছর দেখা গেলেও গরমে বেশি হয়। সাম্প্রতিক অতীতে প্রচুর মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তাই চিকেন পক্স সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে এবং সচেতন হতে হবে। এবার জেনে নেওয়া যাক, চিকেন পক্স সম্পর্কে যেসব বিষয় আমাদের জানা জরুরি।
কীভাবে বুঝবেন চিকেন পক্স হয়েছে ?
ভাইরাস সংক্রমণে এ রোগের শুরুতে শরীর ম্যাজম্যাজ, হালকা ব্যথা, অল্প জ্বর থাকবে, গায়ে ছোট ছোট রাশ উঠবে। সাধারণত এই রাশ বুকে-পিঠে দেখা যায়, তবে সারা শরীরেই উঠতে পারে। এ রাশ পানি থাকে, দেখতে অনেকটা ফোসকার মতো।
কী করবেন পক্স হলে?
চিকেন পক্স আক্রান্ত রোগীকে আলাদা ঘরে রাখতে হবে। থালাবাসন, কাপড়চোপড় বা রোগী স্পর্শ করে এমন সবই অন্যদের থেকে পৃথক করে দিতে হবে। কুসুম গরম হলে স্নান করা ভালো।
কী খাবার খাবেন?
মাছ-মাংস, ডিম-দুধ সবই খাওয়া যাবে। পুষ্টিকর খাবার খেলে রোগ আরোগ্য সহজ হবে। চুলকানির জন্য এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ এবং যাতে অন্য কোনো ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ না ঘটে সেজন্য অ্যান্টিস্যাপ্টিক দেওয়া যেতে পারে। জ্বর, গা ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল এবং সারা শরীরে লোপিও ক্যালাসিন লোশন লাগানো যায়।
জেনে নিন কী কাজ করবেন না
এমন কোনো খাবার খাবেন না যা থেকে রোগীর পূর্ব থেকে শরীরে অ্যালার্জি বা চুলকানি হতো। চিকেন পক্সের ক্ষত খোঁটা যাবে না। খুঁটলে স্থায়ীভাবে দাগ বসে যাবে। এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। ছয় মাসের মধ্যে দাগ এমনিতেই চলে যায়। এজন্য মুখে ডাবের জল ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
এর জন্য কী ধরণের চিকিৎসা প্রয়োজন?
চিকেন পক্স হলে নিয়ম মেনে চলাটা খুব জরুরি। নিয়ম মেনে চললে ১০-১৫ দিনেই পক্স ভালো হয়ে যায়। বাইরে বের হওয়া যাবে না। এতে বাইরের বাতাসে পক্স শুকাতে দেরি হতে পারে। চিকেন পক্সে সাধারণত বিশেষ কোনো ধরনের ওষুধ প্রয়োজন হয় না। তবে চিকেন পক্স হলে শরীর খুব চুলকায় সে জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। এ ছাড়াও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া সব পক্স বের হওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে হোমিও কিংবা ইউনানি জাতীয় ওষুধ খাওয়াতে পারেন। চিকেন পক্স হলে সেপসিস, এনকেফালাইটিস, নিউমোনিয়া ও অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই এসবের চিকিৎসাও করানো প্রয়োজন। পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে। রাশ ঝরা শুরু করলে এগুলো যেখানে-সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে জমা করুন। খোসা এমনিতেই না উঠলে নখ দিয়ে ওঠানোর চেষ্টা করা উচিত নয়। এতে শরীরে দাগ হয়ে যেতে পারে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct