হায়দরাবাদ শহরের ঐতিহাসিক মক্কা মসজিদে ২০০৭ সালের ১৮ মে এক বোমা বিস্ফোরণে ১৩জন নিহত হয়েছিলেন। ওই হামলায় স্বামী অসীমানন্দ অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন। তার আসল নাম নবকুমার সরকার, তিনি হুগলী জেলার বাসিন্দা। ওই ঘটনায় অসংখ্য মুসলিম যুবককেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে রকমই একজন যুবক ছিলেন সৈয়দ আবদুল কালিম। যিনি তিন বছর ধরে কারাগারে সাজা কাটাচ্ছিলেন। ওই মামলার অন্যতম প্রধান আসামী স্বামী অসীমানন্দকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জেলে আনা হয়েছিল। তখন তার সঙ্গে সাক্ষাত হয় কালিমের। তারা দুজন দীঘক্ষণ বসে কথা বলতেন। সে সময় কালিম জানান, অসীমানন্দ যে মামলায় এ জেলে এসেছেন, তিনিও একই মামলায় জেল খাটছেন অনেকদিন ধরে। এর ফলে তার শিক্ষাজীবনসহ পুরো তছনছ হয়ে গিয়েছে।
তাঁর এ ঘটনা জেনে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন খোদ অসীমানন্দ। মক্কা মসজিদে বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রায় একশো মুসলিম যুবককে আটক করা হয়েছিল। কালিমকে আটক করার পর অভিযোগ করা হয়েছিল, চঞ্চলগুদা কারাগারে থাকা এক ব্যক্তির কাছে তিনি ফোন করার চেষ্টা করছিলেন। পরে কালিমের সঙ্গে জেলে সাক্ষাত করে স্বামী অসীমানন্দ নিজে ওই অপরাধের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেন। ফলে কালিম জেল থেকে জামিন পান। এ বিষয়ে কালিম জানান, তার সঙ্গে অসীমানন্দ কথা বলার পর তার কারণে যেসব নিরপরাধ যুবকরা সমস্যায় পড়েছে তাদের ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি কালিমের কাছেও ক্ষমা চান। তখন কালিম তাকে ওই বিস্ফোরণে যারা মারা যাওয়া মানুষগুলির পরিবারের সদস্যদের কাছে এবং ওই মামলার কারণে যেসব মানুষ মিথ্যা অভিযোগে পুলিশী নির্যাতনের মুখে পড়েছে, তাদের কাছে তার ক্ষমা চাওয়ার পরামশ দেন। কালিমের সঙ্গে এসব কথা বিনিময়ের পর স্বামী অসীমানন্দ শুধু বিচারকের সামনে তার দোষই স্বীকার করেননি। বরং এ জন্য যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে দেখা করে ক্ষমা চাওয়ার কথাও জানান। বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার অঙ্গীকারও করেন তিনি। এমনকি তিনি জানান, যদি তিনি মারা যান, তাহলে তিনি তার দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি করে ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মীয়-স্বজনদের আথিক সহায়তা করে যাবেন।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct