মানুষের কোমরব্যথা এক মাসের বেশি থাকে না। উপযুক্ত চিকিৎসা করালে ৯০ শতাংশ রোগী দুই মাসের মধ্যে ভালো হয়ে যান। তবে বেশির ভাগ মানুষ এই কোমরের ব্যথার বিষয়টি এড়িয়ে যান সাময়িকভাবে তা কমে যাওয়ায়। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোমরের ব্যথা অনেকগুন বেড়ে যায়। তাই সময় থাকতে থাকতে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে কোমরের ব্যথা পুরোপুরি নিমূল করে ফেলার টোটকা জেনে নিন।
প্রথমে জেনে নেওয়া উচিত, কিভাবে কোমরের ব্যথা আসে?
১. পেশি, হাড়, জোড়া, লিগামেন্ট, জোড়ার আবরণ, ডিস্ক ও স্নায়ুর রোগ বা ইনজুরি।
২. বুক, পেট ও তলপেটের মধ্যকার বিভিন্ন অঙ্গের সমস্যার জন্য কোমরব্যথা হতে পারে।
৩. যে সব মানুষ অফিসে দীর্ঘক্ষণ বসে একই ভঙ্গিতে কাজ করেন, তাদের কোমরে ব্যথা প্রচণ্ড হয়ে থাকে।
৪. বসার চেয়ার টেবিল ঠিকমতো না হলে বা ঠিকমতো না বসলে বা সামনে-পেছনে ঝুঁকে বসলে কোমরে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
৫. দীর্ঘক্ষণ ড্রাইভিং করলে বা বেশি সামনে ঝুঁকে গাড়ি চালালে কোমর ব্যথা হতে পারে। ড্রাইভিংয়ের সময় পিছনে চেপে বসা উচিত।
৬. শুয়ে কিংবা কাত হয়ে যারা বই পড়েন বা অন্য কাজ করেন, তাঁদের মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।
৭. অনেকক্ষেত্রে যাঁরা কোনো ভারী জিনিস সঠিক নিয়মে তোলেন না। ফলে মেরুদণ্ডে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে, তাদের কোমরে ব্যথা হতে পারে।
কোমরের ব্যথা থেকে বাঁচতে হলে এগুলি মানতে হবে --
১.কোমরব্যথার চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো ব্যথা নিরাময় করা এবং কোমরের নড়াচড়া স্বাভাবিক করা। পূর্ণ বিশ্রাম কিন্তু দীর্ঘদিন বিশ্রাম নিলে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়। তীব্র ব্যথা কমে গেলেও ওজন তোলা, মোচড়ানো পজিশন, অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম ও সামনে ঝুঁকে কাজ করা বন্ধ করতে হবে। সঠিক উপায়ে বসার অভ্যাস করতে হবে এবং প্রয়োজনে ব্যাক সাপোর্ট ব্যবহার করতে হবে। গরম সেঁক (গরম প্যাড, গরম জল বোতল বা উষ্ণ জলে স্নান) নিতে হবে। পেশি নমনীয় ও শক্তিশালী হওয়ার ব্যায়াম করতে হবে। কিছু ব্যায়াম কোমরব্যথা প্রশমনে সাহায্য করে, এমনকি ওষুধের চেয়েও ভালো ফল দেয়। এই ব্যায়াম প্রতিদিন রাতে ও সকালে বিছানায় শুয়ে শুয়ে করতে পারেন। সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৭ মিনিট।
২. সমতল হালকা নরম বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে দুই হাত শরীরের দুই পাশে রেখে দুই পা সোজা করে শুতে হবে। হাঁটু ভাঁজ না করে এক পা ওপরের দিকে তুলুন যত দূর সম্ভব। ১০ সেকেন্ড পা তুলে রাখতে হবে। একইভাবে অপর পা ওপরে তুলুন এবং একই সময় নিন।
৩. এবার একইভাবে হাঁটু ভাঁজ না করে একসঙ্গে দুই পা তুলুন এবং একই সময় নিন।
৪. এক হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে হাঁটুকে বুকে লাগানোর চেষ্টা করুন। ১০ সেকেন্ড থাকুন। একইভাবে অপর হাঁটু বুকে লাগাতে হবে।
৫. একসঙ্গে দুই হাঁটু ভাঁজ করে দুই হাতে জড়িয়ে বুকে লাগাতে হবে।
৬. দুই পা সোজা করে পায়ের পাতার দিকে সটান করে ১০ সেকেন্ড রাখতে হবে। প্রতিটি ধাপ ১০ সেকেন্ড দীর্ঘায়িত হবে বা ১০ গোনা পর্যন্ত করতে হবে। এভাবে ধীরে ধীরে কোমরের ব্যথা কমে যাবে।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct