সাধারণত ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে মেয়েদের মিনি স্কার্ট পরে স্কুলে আসতে হয়। এটাই প্রচলিত রেওয়াজ। তবে আমাদের দেশে স্কুলে সালোয়ার কামিজ কিংবা উঁচু ক্লাসে শাড়ি পরে আসা যায়। মার্কিন মুলুকের অভিজাত স্কুলগুলোতে স্কার্ট পরেই আসতে হয়। কিন্তু এবার মেয়েদের স্কুলে আসার জন্য স্কার্ট পরা বাধ্যতামূলক নয় বলে জানিয়ে দিল মার্কিন আদালত। অভিভাবকদের তরফে অভিযোগ উঠেছিল, শীতের সময় ছাত্রীরা স্কার্ট পরে এলে ঠান্ডায় কষ্ট হয়। আবার এমনি সময় স্কার্ট পরে এলে অনেক সময় তাদের অন্তর্বাস বাইরে দেখা যায়। তা দেখে নাকি ছাত্ররা উত্যক্ত করে। তাই দাবি ওঠে স্কার্ট পরা যেন বাধ্যতামূলক না করা হয়।
তবে অভিভাবকদের এই দাবি মানতে চাননি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার উইলমিংটনের ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত চার্টার ডে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাদের কড়া নিয়ম-কানুন নিয়েই যত বিতর্কের সূত্রপাত। তারা অভিভাবকদের আবদার মানতে নারাজ। বরং তাদের পোশাক বিধির একটু এদিক ওদিক হলেই শাস্তির মুখে পড়তে হবে পড়ুয়াদের।
এই নিয়ে অভিভাবকরা মামলা করেন আদালতে।
নর্থ ক্যারোলাইনার ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের বিচারপতি ম্যালকম হাওয়ার্ড ওই মামলার রায়ে বলেন, সংবিধানে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে। চার্টার ডে স্কুল সেই নিয়ম মানছেন না। তা সত্ত্বেও মেয়েদের জন্য পোশাক বেঁধে দেয়া অসাংবিধানিক শুধু নয় এক ধরনের লিঙ্গ বৈষম্য। তাই
স্কুলে স্কার্ট পরতে বাধ্য করা যাবে না মেয়েদের।
উল্লেখ্য, কিন্ডারগার্টেন থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয় ওই স্কুলে। সেখানে সাদা বা গাঢ় নীল রঙের শার্টের সঙ্গে খাকি প্যান্ট পরে স্কুলে আসতে হয় ছেলেদের। মেয়েদের পরতে হয় স্কার্ট। ইউনিফর্মে একটু এদিক ওদিক হলে শাস্তি পেতে হয় শিক্ষার্থীদের।
জানা গেছে, ২০১৬ সালে এই নিয়মের বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালতে যান স্কুলেরই তিন শিক্ষার্থীর অভিভাবক। তারা জানান, কনকনে ঠান্ডায় স্কার্ট পরে স্কুলে যেতে সমস্যা হয় তাদের মেয়েদের। সর্বক্ষণ পা জড়ো করে বসতে হয়। এমনকি স্কার্টের জন্য ইচ্ছে থাকলেও খেলাধূলা করা হয়ে ওঠে না। অসাবধানবশত অন্তর্বাস বেরিয়ে পড়লে ছেলেরা তাদের উত্ত্যক্ত করে। আবার বকুনি খেতে হয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছেও। তাই স্কার্টের বদলে ছেলেদের মতো প্যান্ট পরতে দেয়া হোক মেয়েদের বলে দাবি তোলা হয়।
গত তিন বছর ধরে সেই মামলার শুনানি চলার পর চলতি সপ্তাহে ওই তিন অভিভাবকের পক্ষে রায় দেয় আদালত।
যদিও এই সিদ্ধান্তে স্কুলের ঐতিহ্য ও নিয়ম-শৃঙ্খলায় প্রভাব ফেলবে বলে যুক্তি দেখান চার্টার ডে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct