কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের সরকার স্বীকৃত আন এডেড মাদ্রাসাগুলি তাদের দাবি আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
ভারতীয় সংবিধানের ৩০ ধারায় সংখ্যালঘু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে সরকারি অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে বৈষম্য করা যাবে না, এমন উল্লেখ থাকলেও তা না দেওয়ার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এক জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার আন এডেড মাদ্রাসার শুনানি ছিল।
২৩৪ টি সরকার অনুমোদিত আন্ এডেড মাদ্রাসাগুলিতে অনুদানের জন্যে কলকাতা হাইকোটের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ২০১৭ সালের ১৪ জুলাই জনস্বার্থ মামলা করেন মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা ৬৫ বছর বয়স্ক মাইনুদ্দিন আহমেদ। গত ৪ জানুয়ারি সেই মামলার প্রথম শুনানি হয়।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে অনুমোদিত ২৩৪ টি আন এডেড মাদ্রাসাগুলিতে অনুদান দেওয়া নিয়ে আজ শুক্রবারের শুনানি হল এনিয়ে সপ্তম শুনানি।
গত ২২/২/১৯ তারিখের শুনানির দিনে সরকার পক্ষ যে হলফনামা দিয়েছিল, হাইকোর্ট তাতে সন্তুষ্ট না থাকায় আবারও হলফনামা দিতে বলেছিল।কিন্তু আজ সরকার পক্ষের আইনজীবী সেই হলফনামা জমা দেননি। এদিন শুনানি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহামান্য বিচারপতিদের কাছে আবেদন করেন আরো এক সপ্তাহ সময়ের জন্য। ডিভিশন বেঞ্চ তাই শুনানির দিন ধার্য করেন আগামী ৫ এপ্রিল।
এভাবে সরকারি আইনজীবী ফের সময় চেয়ে নেওয়ায় ক্ষুব্ধ আন এডেড মাদ্রাসা শিক্ষক, কর্মচারী ও তাদের শিক্ষক সংগঠন।
আন এডেড মাদ্রাসা বাঁচাও কমিটির রাজ্য সম্পাদক আব্দুল ওহাব মোল্লা বলেন,
রাজ্য সরকার বুঝে গিয়েছে হার নিশ্চিত। তাই দীর্ঘএক মাস সময় পেয়েও আজ হলফনামা জমা করতে পারল না। তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন সব সংখ্যালঘু প্রকল্প বা উন্নয়নের কাজ যাতে দ্রুত শেষ হয় তা সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই আশা হয়েছিল রাজ্য সরকার হয়তো এবার তাতে সায় দিয়ে আন এডেড মাদ্রাসার অনুদানে সবুজ সংকেত দেবে। কিন্তু তা হল না।
আব্দুল ওহাব মোল্লার অভিযোগ, নানা কৌশলে শুনানির দিন নিয়ে নিয়ে নির্বাচনের দোরগোড়ায় এল রাজ্য সরকার। প্রতিশ্রুতি দিয়ে রক্ষা করল না মমতার সরকার। লোকসভা ভোট পর করাতেএটা মা মাটি মানুষের সরকারের ছলচাতুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন সংখ্যালঘুরা এবার এর যোগ্য জবাব দেবে।
ওহাব এ প্রসঙ্গে আরো বলেন,
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মহাকরণে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ১০০০০ আন্ এডেড মাদ্রাসার অনুমোদন দেওয়া হবে কিন্তু অনুদান দেওয়া হবে না।
এরপর দীর্ঘ দু বছরে মাত্র ১৫ টির মতো মাদ্রাসার অনুমোদন পায়। তারমধ্য কোচবিহারে ৫ টি। লজ্জা ঢাকতে তড়িঘড়ি ০৮/০২/১৩ সালে M.A & M.E dept থেকে অনুদানের জন্যে একটা Order বার করে সমস্ত জেলার জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দেন। এই Order বার হওয়ার পর ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২১৯ টি মাদ্রাসার অনুমোদন পায়।
এরপর অনুমোদন পেল কিন্তু ০৮/০২/১৩ এর Order টি বাস্তবায়িত না হওয়ার দরুন কলকাতা হাইকোটে মামলা করে মুশিদাবাদের একটা মাদ্রাসা। ২৮/১১/১৩ সালে সেই মামলার রায় দেন আদালত। পরিষ্কার করে বলে দিয়েছিল মহামান্য আদালত যে অনুমোদন দিলে, অনুদান দিতে হবে এবং ০৮/০২/১৩ এর order টি বাস্তবায়িত করতে হবে।
কিন্তু রাজ্য সরকার তা না মানায় অবশেষে জনস্বার্থ মামলা হয়।
All Rights Reserved © Copyright 2024 | Design & Developed by Webguys Direct